Home » ঝাড়খণ্ডের লোকগল্প ।। অনুবাদঃ ম্যাগডিলিনা মৃ

ঝাড়খণ্ডের লোকগল্প ।। অনুবাদঃ ম্যাগডিলিনা মৃ

 তিন ফোঁটা হাঁড়িয়া, তিন ফোঁটা রক্ত

বহু আগে ঘন বন-জঙ্গলেই মানুষের বসতি ছিল। ধীরে ধীরে সে বসতি হয়ে উঠে গ্রাম। বনের মধ্যেই ছিলো তাদের শস্যাগার, কৃষি জমি। সেই সময়ে লোকেরা আগুনের পূজা করতো। তো একদিন এক লোক বনের মধ্যে চাষ করা ধান কাটতে গেল। মুহূর্তেই সাদা পোশাকে এক ব্যক্তি সেখানে হাজির। সে দাঁড়িয়ে ধান কাটতে থাকা সেই কৃষককে বললো, যে বছর তুমি আমার নামে তিন ফোঁটা হাঁড়িয়া ও তিন ফোঁটা রক্ত দান করবে, সে বছর তোমার প্রচুর ধান হবে। এরপর সাদা পোশাক পড়া লোকটি নিজের নাম তপা বলে অদৃশ্য হয়ে গেল।
সেই কৃষক সন্ধ্যায় ঘরে ফেরার পর ঘটনাটি তার স্ত্রীকে জানাল। পরের দিন তার স্ত্রী নিজের হাতে হাঁড়িয়া তৈরি করে সকাল সকাল স্নান শেষ করে একটা মোরগ আর হাঁড়িয়া নিয়ে বনের ভেতর কৃষি জমির সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। তারা দূরে সেই সাদা পোশাক পরা তপাকে দেখতে পেল। কৃষক আর তার স্ত্রী দ্রুত পায়ে তপার দিকে এগুতে লাগলো। কিছুক্ষণ যাওয়ার পর তারা দেখল সাদা পোশাক পরা তপা উধাও হয়ে গেছে।
সামনে এগিয়ে গিয়ে কৃষক দম্পতি দেখলো কিছু লোক শুকনো পাতা জড়ো করে আগুন জ্বালিয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞেস করলো তারা তপাকে দেখেছে কিনা? তারা বললো তপাই এই আগুন জ্বালিয়েছে। কৃষক দম্পতির হাতে এক মটকা হাঁড়িয়া আর আস্ত একটি মোরগ দেখে তপা অবাক হয়ে তাদেরকে বললো, আমি চেয়েছিলাম তিন ফোঁটা আর তোমরা কিনা আস্ত একটা মোরগ আর পুরো এক মটকা হাঁড়িয়া নিয়ে এসেছো। তপা খুব খুশি হলো। কৃষক তৎক্ষণাৎ সেখানে মোরগটা জবাই করে তিন ফোঁটা রক্ত এবং মটকা থেকে তিন ফোঁটা হাঁড়িয়া ফেললো। তপা তারপর কৃষককে বললো, আর এক ফোঁটাও লাগবে না। এখন আস্ত মুরগী আর মটকার হাঁড়িয়া সব তোমাদের। এরপর তপা একেবারেই অদৃশ্য হয়ে গেল। তাকে আর কখনো বনে দেখা গেল না।
সেই কৃষক বাড়ি ফিরে রীতিমতো আগুনের পূজা করলো। সে বছর থেকে তার জমিতে এত ধান আর ফসল হয়েছে যে সে অনেক ধনী হয়ে গেল।

আজও ঝাড়খণ্ডের মুণ্ডা জনগোষ্ঠী ধান কাটার সময় তপাকে উৎসর্গ করে তিন ফোঁটা হাঁড়িয়া ও তিন ফোঁটা মোরগের রক্ত মাটিতে ফেলে পূজা করে।
……….

 ত্যাগের ফল

অনেক অনেক আগের কথা। এক গ্রামে হতদরিদ্র এক বৃদ্ধ দম্পতি ছিলেন। তাদের একটি ছেলে সন্তান ছিল নাম চতুর। খুব অল্প বয়সেই চতুরের বাবা-মা’র মৃত্যু হলে চতুর খুব অসহায় হয়ে পড়ে। উপযুক্ত বয়স হওয়ার আগেই তাকে জীবিকার সন্ধানে বের হতে হয়। গ্রামের কিছু বয়স্ক লোক চতুরকে সাহায্য করার চেষ্টা করলেও আত্মমর্যাদাশীল চতুর তাতে রাজি হয়নি। সে কারো দয়া কিংবা করুণা নিতে রাজি ছিল না। সে গ্রামরে বাইরে তার বাবা মা’র পরিচিত একজন লোকের কাছে গিয়ে চাকরি চাইল। লোকটি চতুরের আগ্রহ আর একাগ্রতা দেখে চাকরি দিল।
চতুর সব সময় পরিশ্রমের মাধ্যমে তার মনিবকে খুশি রাখার চেষ্টা করত। সময় বয়ে যাচ্ছিল। প্রায় তিন বছর কেটে গেল। অনেকদিন নিজের গ্রামের বাইরে চাকরি করে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল চতুর। প্রায় তার সুন্দর গ্রাম আর গ্রামের বন্ধুদের কথা মনে হলে মন খারাপ হয়ে যেত। শেষমেষ চতুর বেশ কিছুদিনের ছুটি নিয়ে নিজের গ্রামে ফেরার সিদ্ধান্ত নিল। সে তার মনিবের কাছ থেকে তিন পয়সা মজুরি এবং কয়েক মাসের ছুটি নিয়ে গ্রামের পথে রওনা হলো। পথে এক বৃদ্ধের সাথে তার দেখা। চতুরকে দেখে বৃদ্ধ লোকটি অনুরোধ করে তাকে কিছু খাবার কিনে দিতে বললো। কারণ সে তিন চারদিন ধরে অনাহারী। বৃদ্ধের দিকে তাকিয়ে চতুরের বাবা মায়ের কথা মনে হলো। এদিকে চতুর নিজেও যাত্রাপথে কিছু শুকনো খাবার খেয়েছিল। তবুও সে পকেট থেকে তার আয়ে তিন পয়সা সেই বৃদ্ধ লোকটিকে দিয়ে দিল।
এরপর সেই বৃদ্ধটির সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে কিছু দুর আসার পর চতুর খেয়াল করল লোকটির খালি মুখে ধীরে গোফ গজিয়ে বড় হয়ে যাচ্ছে। এটা দেখে সে খুব ভয় পেয়ে গেল। সে ভয়ে কাঁপতে লাগলো। চতুরকে ভয় পেতে দেখে লোকটি চতুরকে অভয় দিয়ে বলল, ‘ভয় পাচ্ছ কেন? তোমাকে সাহসের সঙ্গে, বিশ্বাস নিয়ে যেকোনো ঘটনা মোকাবেলা করতে হবে। তুমি খুব দয়ালু ছেলে। তোমার দয়া দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি। কোন লাভ ছাড়াই তুমি তোমার সমস্ত উপার্জনের টাকা আমাকে দিয়ে দিয়েছ। তোমার দানের তিন পয়সার বদলে আমিও তোমাকে তিনটা জিনিস দিতে চাই। এসো, আমার সাথে এসো।’
চতুর ভয়ে ভয়ে লোকটির পেছন পেছন হাঁটা শুরু করল। বাড়িতে নিয়ে এসে গোঁফওয়ালা বৃদ্ধ লোকটি চতুরকে একটা সারেঙ্গী দিল আর বললো এটা বাজালেই দেখবে মানুষ নাচতে শুরু করবে। তীর-ধনুক দিয়ে বলল, এটা দিয়ে যা কিছু লক্ষ্য করে মারবে সে লক্ষচ্যুত হবে না এবং সেটি পুনরায় তোমার কাছে ফিরে আসবে। আর তৃতীয় যে জিনিসটি তোমাকে দিব সেটি হলো সত্য। কখনো মিথ্যে বলবে না, জীবনে যত বিপদেই পড় না কেন। তুমি যা বলবে, মানুষ তা সত্য বলে মেনে নেবে।
এরপর বৃদ্ধ লোকটি উধাও হয়ে গেল। চতুর প্রথমে খুব ঘাবড়ে গেলেও পরে সেখানে কিছুক্ষণ সাহসের সাথে অবস্থান করে ধীরে ধীরে আবার গ্রামের পথে রওনা হলো।
কিছুদূর যাবার পর চতুর দেখল এক বণিক গাছের ছায়ায় শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে। সেই গাছে একটা সুন্দর পাখি বসেছিল। সেটা দেখে বণিকের মনে খুব লোভ হলো। চতুরের কাছে তীর-ধনুক দেখে বণিক চতুরকে পাখিটা শিকার করে দেওয়ার কথা বললো এবং বিনিময়ে অনেকগুলো মুদ্রা দেওয়ার প্রস্তাব দিল। চতুর বণিকটিকে আশ্বাস দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে সেই পাখিটিকে তীর মেরে আহত করলো। পাখিটি ঝোপের মধ্যে পড়ে গেল। চতুর আনন্দে মেতে উঠল। সে আনন্দের সঙ্গে তাকে দেওয়া সারেঙ্গীটি বাজাতে শুরু করলো। বণিক তড়িঘড়ি করে ঝোপে ঢুকে গেল পাখিকিে ধরতে। চতুর খুশিতে তার সারেঙ্গী বাজাচ্ছে তো বাজাচ্ছে। এদিকে সারঙ্গীর আওয়াজ এমন মোহনীয় ছিল যে বণিকও কাটাঘেরা ঝোপের ভেতর নাচতে শুরু করে দিল।
ঝোপের গাছপালা আর কাঁটার সাথে জড়িয়ে তার জামাকাপড় ছিঁড়ে গেল। প্রায় অর্ধ নগ্ন অবস্থায় বণিক ঝোপের ভেতর থেকে আহত পাখিটি ধরে আনে। বণিকের শরীরে আঁচড়ের দাগ থেকে রক্ত ঝরতে লাগলো। বণিকের অবস্থা দেখে চতুরের করুণা হল। সে সারেঙ্গী বাজানো বন্ধ করে বণিকের কাছ থেকে বিদায় নিতে চাইল। বণিক খুশি হয়ে চতুরকে টাকা ভর্তি একটি ব্যাগ হাতে ধরিয়ে বিদায় দিয়ে দিল। বেতনের সব টাকা বৃদ্ধকে দিয়ে চতুর প্রায় খালি হাতেই গ্রামে ফিরছিল। পুরস্কার হিসেবে টাকা ভর্তি ব্যাগ পেয়ে আনন্দে প্রায় আত্মহারা হয়ে গেল। মনে মনে সেই বৃদ্ধকে ধন্যবাদ দিতে লাগলো।
এদিকে আবেগের বশে টাকা হাত থেকে ফসকে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর বণিক ভাবলো কাজটা তার ঠিক হয়নি। টাকা ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য সে চতুরের পিছনে দৌড়াতে লাগলো। চতুরের পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে সে চেঁচিয়ে হাঁক দিতে লাগলো- কে আছ তাকে ধর। এই ছেলেটা আমার টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে। এদিকে গ্রামবাসীরা চতুরকে চারপাশ থেকে ছুটে এসে ধরে ফেলল। তারা মারধর করে চতুরকে পাশেই থানায় সোপর্দ করল।
থানায় পুলিশের এক অফিসার চতুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে চতুর সেই অফিসারকে বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করলো সে চুরি করেনি। এই বণিক খুশি হয়ে তাকে টাকাগুলো উপহার দিয়েছিলো। কিন্তু পাশেই বণিক এই কথা শুনে আরো রেগে গিয়ে চতুরকে মিথ্যেবাদী প্রমাণ করার চেষ্টা করতে লাগল।
পুলিশের অফিসারও সেটি বিশ্বাস করতে নারাজ। কারণ পাখি মারার বিনিময়ে কেউ এতগুলো টাকা দিবে এটা একমাত্র পাগল ছাড়া আর কেউ বিশ্বাস করবে না। অফিসার বলল, পাখি মারার বিনিময়ে এক থলে টাকা কে দেবে? আর পুরস্কারদাতার শরীরে আঁচড়ের দাগ কীভাবে পড়বে অথবা তার জামাকাপড় কীভাবে ছিঁড়বে? তুমি নিশ্চয় কোনো ডাকাত দলের সদস্য। এই বলে অফিসার চতুরকে থানায় পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল।
এক কনস্টেবল চতুরকে হাজতে ঢুকিয়ে রাখে। চতুর মনে মনে ভাবতে লাগলো, সারেঙ্গী বাজিয়ে আবার চেষ্টা করবে কিনা। কারণ বিপদের সময়ে হার মানা ঠিক হবে না। যেই কথা সেই কাজ, চতুর থানায় সারেঙ্গী বাজাতে শুরু করল। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে উপস্থিত সবাই নাচতে লাগলো। সবাই নাচতে নাচতে ক্লান্ত হয়ে গেল। এদিকে পুলিশের সেই অফিসারও নাচতে থাকল। শেষে অফিসার ধমক দিয়ে চতুরকে সারেঙ্গি বাজানো বন্ধ করার নির্দেশ দিলো। সারেঙ্গি বাজানো বন্ধ হতেই সবার নাচ থেমে গেল। এবার চতুর পুলিশ অফিসারকে বুঝাতে লাগলো কিভাবে বণিকের গায়ে আঁচড় লেগেছিলো। এই ঘটনার পর পুলিশ অফিসার বুঝতে পারলো চতুর আসলে কোনো দোষ করেনি সব দোষ সেই বণিকের। পুলিশ অফিসার খুশি হয়ে চতুরকে ছেড়ে দিলো এবং পুরষ্কার হিসেবে টাকার ব্যাগের সঙ্গে তার পক্ষ থেকেও একটি সুন্দর পাটের ব্যাগ উপহার দিলো।
……….

 ঈর্ষার ফল

এক গ্রামে সাত ভাই ছিলো। ছয় ভাই কৃষিকাজ করতো আর সবার বড় ভাই ছিল শিক্ষিত ও বুদ্ধিমান। সে রাজদরবারে চাকরি করতো। সে প্রতিদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে গরম ডাল-ভাত খেয়ে রাজদরবারে চলে যেতো কাজে। আর বাকিরা চলে যেত ফসলের মাঠে। পাঁচ ভাই একসঙ্গে সারাদিন মাঠে কাজ করে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতো।
ছয় ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ভাই তার বড় ভাইয়ের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে ওঠে। সে অন্য ভাইদের বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা করতো আর বলতো,বড় ভাই কোন পরিশ্রম না করে সকাল সকাল গরম ভাত খেয়ে চলে যায়। সেখানে গিয়ে সারাদিন রাজদরবারে বসে আরাম আয়েস করে। আর তারা সবাই মিলে ফসলের মাঠে কাজ করে অথচ তাদের কপালে গরম ভাত আর ডাল জুটে না। সব ভাই তাকে বুঝিয়ে বলল,বড় ভাইয়ের কাজ অনেক বুদ্ধির। রাজদরবারে বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করতে হয়। সেখানে শুধু শুধু শারীরিক পরিশ্রমে কাজ করলে চলে না।
ছোট ভাই তবুও তা মানতে নারাজ। সে কোনোভাবেই সেটি বিশ্বাস করতে চাইতো না। বরং বলতে লাগলো সুযোগ পেলে সেও সেই কাজ করতে রাজি। এবং তার বড় ভাই রাজি থাকলে সে একদিন রাজদরবারে গিয়ে কাজ করে বুঝিয়ে দেবে সেও পারে। বড় ভাই রাজি হয়ে পরদিন তার জায়গায় ছোট ভাইকে রাজদরবারে কাজ করতে পাঠিয়ে দিল। অন্য ভাইয়েরা অনেক বুঝিয়ে বললেও সে রাজি হয় না। সে যাবেই যাবে।
পরদিন সকালে গরম খাবার খেয়ে সে রাজদরবারে পৌঁছে ভাইয়ের চেয়ারে শক্ত হয়ে আরাম করে বসে রইলো। দরবারে এই নতুন লোকটিকে দেখে রাজা জিজ্ঞেস করলেন, কে সে, পুরাতন চাকর কোথায়?
ছোট ভাই বলল, ভাইয়ের জায়গায় সে হাজিরা দিতে এসেছে। রাজা তাকে প্রশ্ন করলেন,”বন্দুকের একটি গুলি হরিণের পায়ে ও কানে কিভাবে আঘাত করবে?”
ছোট ভাই অনেকক্ষণ ধরে ওপর-নিচের দিকে তাকিয়ে রইল। সে কোনোভাবে উত্তর দিতে পারলো না। শাস্তি হিসেবে রাজা তাকে সারাদিন এক পায়ে দাঁড় করিয়ে রাখলো। বোকা ছোট ভাই সারাদিন এক পায়ে দাঁড়িয়ে রইলো।
বিকেলে ছুটিতে বাড়ি ফেরার পর দেখা গেল তার মন খুব খারাপ। আস্তে আস্তে সব কথা ভাইদের জানাল সে এবং স্বীকার করল রাজদরবারের কাজটা আসলেই কঠিন। বড় ভাই হেসে বললো, শুধু খাবার খাওয়ার লোভে সারাদিন শাস্তি ভোগ করতে হলো। এটা এমন কোন বড় প্রশ্ন ছিল না! হরিণ যখন পা দিয়ে কান আঁচড়াবে,ঠিক সেইসময়ে গুলি করলে পা ও কানে একসঙ্গে আঘাত করা যাবে। ” বড় ভাইয়ের কথা শুনে ছোট ভাই লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলল।
……….

গল্প সংগ্রহ: মুণ্ডা লোকগল্প সংগ্রহ / সত্যনারায়ণ নাটে
সূত্র: ভারতীয় লোকগল্পের একটি ইংরেজী ওয়েবসাইট থেকে

Ajit Dash

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ভাষা
Scroll to Top