কাজল ওরেখায়
চোখ ও যন্ত্রনার মাঝ ছুঁয়ে আছে
নাতিশীতোষ্ণ জল
ব্লেডের ধার ছুঁয়ে থাকে
প্রাচীন রক্তের ধারা… এভাবেই
শুয়ে আছে,ছুঁয়ে দেখছে মাটি সরস আছে তো?-
পাড় ভাঙ্গার আগে নদীর কৌশল
একটু শ্বাশ্বত ছোঁয়া..
নীরবতায়
কাজল ও রেখায় দেয়ালা সারে
খেয়ালী মন
অপরাহ্নের ছোঁয়ায়
১
অপরাহ্নের ছোঁয়া দিতেই যেন কৃষ্ণচুড়ার আন্তর্জাতিকতা…
কিছুটা ঢেউ দিলেই ঘুম পায় নিমের হাওয়ায়
এলোমেলো চুল
হয়ে পড়ে
ঝড়ের পরবর্তী গাছগুলো …
২
একটি দুটি পরিযায়ী
হঠাৎ উড়ে গেলে
মন উদাস হয় বৈকি
ঘ্রাণ খুঁজে ফিরি
প্রিয় মানুষের
কত প্রেম কত অনুরাগ
বাসি হলেও উৎসব অনন্ত
কতকাল বয়ে বেড়াব
কতকাল বয়ে বেড়াব ঘুসঘুসে জ্বর… সংক্রমণ?
কতকাল বয়ে বেড়াব তোমার ‘আমি‘
কতবার স্পর্শবিহীন
উদ্ভিদ
অতলে তল দেখব সর্পগন্ধা শেকড় দিয়ে…
বৃত্তও অন্তে গিয়ে হয়েছে শুধুই গরমিল
শব্দ নেই
ছেলেখেলা করে না কেউ
শুধু পড়ে আছে ধ্বনিমোহ
আর
বিকেল মিশিয়ে
মন্দিরে যাওয়ার অন্ধকার রাস্তাটুকু,
সেও তোমার মতই সন্তপ্ত …
যতদূর চোখ যায়
পালাতে চাই এই দৃশ্য থেকে, এই রসায়ন সবুজ সবকিছু থেকে।
পালাতে ইচ্ছে করলেই ডানা মেলি…এই পথভার অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।
অক্টোপাসের মত আটটি গলি।
সখ্যতা মেশানো ছাতিমগাছ আর ওই পর্যন্তই তার পরিধি।
নজরমিনার থেকে নিকট জঙ্গলে একটা পথছায়া
যতদূর চোখ যায়
……
পালানো হয় না আর
তোমার চোখের ইশারায়
আগামীর বিশ্রাম,দাঁড়িয়ে আছি বিবশ নারী।
শার্সি-ভাঙ্গা জলের রেখায়
১)
বৃষ্টিপাতের পর শব্দ নেই আর বৃষ্টি ছাড়া…
শার্সি-ভাঙ্গা
জলের রেখায়
খলের পিরিতি
জলে ভাসে চবুতরা
আর পরবর্তী শ্রাবণ
২)
ফলের বোঁটায়
ঝুলে থাকে জন্মদাত্রী মৃত ফুলটি
একটানে ছিঁ ড়ে নেয় কেউ
অথবা ঝরে যায় অলক্ষ্যে
মানুষের জীবনের মত
কর্ম পড়ে থাকে শুধু ফলের পরিচয়ে।
পাকদণ্ডী
পাহাড়ে গেলে যা হয়…
পাকদন্ডীতে পৌঁছে গেলে মনেহয় ধরে ফেলেছি
উচ্চতা ও
তারাদের তন্তুজাল
কিছু মথ অনুষঙ্গ
চিরহরিৎ উৎফুল্ল রঙের ঘন বাঁক
সিডার বনের ঈশ্বর
ছায়ায় আঁকেন
সুখ ও
আরোগ্যের রূপালী নদী।
মঙ্গলকাব্যের ভিতর ভোরের রামপ্রসাদী…
কাঞ্চনজঙ্ঘার কোল থেকে আসা রোদ-আলো,
এই আলো দেখা ফুরোয় না
মাছের চোখ নিয়ে দিগন্ত
আর সবকটা পাকদণ্ডী
যেন সাপের মুখ ধরে বেয়ে নেমে আসা
অশ্বারোহীর জিন
রিপুবিষয়ক
মুখচোরা ঘরকুনো এক কান্না-ভেজানো দরজা দিয়ে ঢুকছে
অসহায়ভাব
হীনমন্যতা যাচ্ছে দেয়াল ঠুকে
অসমান হাতবাক্সে জমা রেখেছি ছেনি- হাতুড়ি
আমরা সাবেক দেয়াল ভেঙ্গেছি
ভার্চুয়াল দুনিয়ায় পা ফেলে
স্বপ্ন দেখতে শিখেছি
ব্যক্তিগত স্টারডমের
আমরা শুধু শুধু আস্তিনে পুষছি
ছয়টি হলদে কালান্তক সাপ
রিপুর …
নাগপাশ
নৈঃশব্দ্যের বাসুকি নাগ
কথা হয়ে ছোবল মারে অলস ধমনীতে।
ভুলে যাই
কিভাবে নিজেকে ছাড়াতে হয় …
নাগপাশ এড়িয়ে ভিন্ন পথে যমুনায়।
পর্ণমোচী মুহুর্তে
ফুরিয়ে এসেছে দুপুরের এরোমা, ডালে ডালে ক্লোরোফিলের সঞ্চয়,
পর্ণমোচী মুহুর্তে তুমি এলে
দমকা হাওয়া
বাসস্টপে পলকা ডট্ আঁচলের ছাতা ছিঁড়ে যায়।
স্বগতোক্তি কিছু
কল্পনার সূত্রে বহুদূর থেকে জেগে ওঠে কংসাবতী নদী এক;
মাতম নেমে আসে তারার রাজ্যে,
ভাঙ্গা দীপাবলী
রাতকে সূচিত করেছি নেভানো বাতিতে,
দীর্ঘতম পিপাসার মত দূরত্বের প্রেম ছটফটায়।
চাইনিজ ইঙ্কের নকশা থেকে হাত সরে যায় কবিতার দিকে,
মুদ্রাদোষে
শব্দ সাজাই
কাঁটাছেঁড়া কথা সব লেখা যায় না।
নিসর্গের বাইরে
নিসর্গের বাইরে যত সব হিংস্র ছবি
হৃৎপিণ্ডের জলে ভাসে
অসুখের পিরান্হা, হাড়-মাংস খুঁটে খেতে তৎপর…
নিত্যসঙ্গী মুখোশে ভালোলাগা‘ও ক্লান্তিকর হয়ে ওঠে
কখনও…
নৈমিত্তিক হ‘লে সব নতুন করে গড়ি।আপাত সন্ধি।
স্বপ্নলিপি জমা রেখে দিলাম হিমঘরে।
দিনলিপি থেকে
মন
হাওয়ায় ভাসতে দিয়েছি তাকে ছোট্ট
দূর্গা টুনটুনির মত..
প্রয়োজন একটি সম্বোধনের-
কাকে এসে বসাই শেষ পংক্তিতে
মৃত্যুবৎ সাপ পেঁচিয়ে আছে
প্রেমাঙ্গুরীয়‘তে
খুলে ফেলি একটানে
সঁপে দিয়েছি নিজেকে
অনবধানতার হাতে দিনরাত সঁপে দিয়েছি তার মানে।