- ফেব্রুয়ারী ১৪, ২০২১
মুক্তি
আকাশ ছেড়ে
কলাপাতার ওপরে বসে একটি শালিক
ক্লান্ত ঠোঁটে
খুলে ফেলছে নিজের ডানা
কলাগাছ
শালিকের ডানা লাগিয়ে উড়ে যাচ্ছে আকাশে।
দুঃখ
ওয়েটমেশিনের ওপরে দাঁড়িয়ে আছি
আমার ওজন শূন্য দেখাচ্ছে। ব্যাটারি মেশিন সবই
ঠিকঠাক
মাটি থেকে ধীরেধীরে উপরে উঠে যাচ্ছি।
মানুষ
মানুষ নিজেই একটি বিয়োগচিহ্ন
ট্রেনের বগির মত
জোড়া লেগে পালিয়ে যাচ্ছে স্টেশন থেকে…
দেবদারুগাছ
নদীর পাশে
একটা দেবদারুগাছ
দেখতে দেখতে
নদীর ছায়াটি উঠে চলে আসে তার দেহে
লুকিয়ে রাখে অনেকদিন
রাত হলে
হেঁটে চলে যায় দূর গ্রামে
মা গাছটির কাছে এলে
ঢেলে দেয় আস্ত একটা নদী।
আনন্দবৃক্ষ
পয়সার
ভেতরে একটি আনন্দবৃক্ষ
প্রতিবার
হাত বদলে
একটি করে ফুল ফুটে
ছড়িয়ে পড়ে শাদা ঘ্রাণ।
মায়া
রেললাইন থেকে
একটি পাথর নিয়ে আসি ঘরে
ট্রেনের শব্দ পেয়ে
পাথরটি দরজা খুলে চলে যাচ্ছে রেললাইনে ।
ফুলস্টপ
ফুলস্টপে
দাঁড়িয়েছিলাম অনেকদিন
চারপাশ দেখে
মাছের খোঁজে
মাছরাঙ্গার মত ডুব দিয়ে
শূন্য ঠোঁটে
উড়ে যাচ্ছি আকাশে
তীরভাঙা ঢেলার মত জলে পড়ে যাচ্ছে ফুলস্টপ ।
উত্তরাধিকার
বাবার প্লেটে আলুভর্তার পাশে আস্ত একটা চাঁদ
জোছনা খেতে খেতে বাবা একদিন জোনাকি হয়ে যায়
পোড়ামরিচের অন্ধকারে দৌড়ে
আয়ুরেখা অতিক্রম করেছিল মা
পান্তাভাত আর কাঁচামরিচের পাশে উৎপন্ন শীতকাল
আমার উত্তরাধিকার।
চক্র
একটি কালো ছাগল
ঘাস খেতে খেতে পুরা বিকেলটাই খেয়ে বসে আছে
পাকস্থলীতে
সন্ধ্যা নেমে রাত আসে
পরদিন
মলদ্বার দিয়ে বের হওয়া উজ্জ্বল ভোরের ঘ্রাণে
দুপুরের পেটে ঢুকে যাচ্ছে কালো ছাগল ।
বোন
কার্তিকের চাঁদটা ছিঁড়ে
ডেকচিতে রান্না করে
পাড়ায় পাড়ায় বন্টন করা হলো মাংস
মাংসের হলুদ ঘ্রাণে
বোনকে খুঁজতে
বনের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে একটি নীল হরিণ।
জংশন
বরফ কেটে বানানো কুকুর
বিষদাঁত জমা রেখে
লাফিয়ে পড়ে জলের জংশনে
সমুদ্রের ট্রেন মিস করে
জোছনার তাড়া খেয়ে চলে আসে চাঁদের কাছে।
জ্যামিতিক সাপ
গণিতখাতার মতো রাত
চুপচাপ শুয়ে আছে টেবিলে
পৃষ্ঠা উল্টালে
জ্যামিতি সাপ বিষ ঢেলে দেয় জোছনার ভেতরে
কালো জোছনায় খরগোশের দৌড় –
দূরের চাঁদ ডুব দেয় নদীতে, শুরু হয় জলের বেদনা।
বালিশ
হাঁসের পায়ের মতো হলুদ বিকেলগুলি
পোশাক খুলে শুয়ে থাকে সন্ধ্যার বালিশে
বালিশ বদল হলে বিকেলও বদলে যায়!
ঘুণপোকা
তোমার মন ব্যস্ত ঘুনপোকা
বাহিরে ঠিকঠাক, ভেতরে কেবল কেটেই চলেছো
কাঠ থেকে কাঠেই তোমার গমণ !
শূন্যস্থান
শূন্যস্থানে জল শব্দটি বসলো
সাথে সাথে ভিজে গেল প্রশ্নপত্র
প্রশ্নপত্রের শেষপ্রান্তে আঁকা একটি পাখির ছবি
শূন্যস্থানের সব জল পান করে
উড়ে গেল নক্ষত্রের দিকে
সেদিন থেকে উত্তরপত্র জুড়ে শূন্যস্থান ।