[গারো ভাষায় প্রায় বারোটির মত ডায়ালেক্ট রয়েছে। এই বারো ভাষাভাষী গোষ্ঠীই গারোদের বারোটি দল। যেমন আ•চিক, আ•বেং, আকাওয়ে, আত্তং, চিবক, দোয়াল, মাচ্চি, মিগাম, গারাগানচিং প্রভৃতি। তন্মধ্যে ভারতীয় গারোদের মধ্যে আ•চিক, এবং বাংলাদেশি গারোদের মধ্যে আ•বেং সাধারণভাবে প্রচলিত।
উচ্চারণ প্রসঙ্গে-আচিক ভাষার নিজস্ব কোনো বর্ণমালা না থাকার কারণে বাংলায় লিখিত অনেক আচিক শব্দ উচ্চারণে বিভ্রম ঘটাতে পারে তাই মূল উচ্চারণটি বুঝাতে কোনো বর্ণের আগে একটি ডট [•] বসানো হয় যেটিকে গারো ভাষায় বলে ‘রাক্কা’ বা Rakka। মূলত এই চিহ্নটি দ্বারা কোনো নির্দিষ্ট ধ্বনিতে জোরারোপ করতে বা শ্বাসাঘাত করে উচ্চারণ করাকে বুঝানো হয়। যেমন Man•a > manna হবে ]
———
♦♦♦ উয়া আচিক মিচিক ♦♦♦
নিক্কামিং বিকো আনথামফাঙও
মেঘালয়নি উয়া গারো আব্রিও,
গিৎচাক দকমান্দাও বিকো নিক্কামিং সিল্লে,
খা’সিস্রিন বাল্লুয়াও খিন্নি রিয়াঙামিং বিল্লে;
নূপুর গান্নে র’ঙামিং বিয়া
খা’সা রা’আনি গীত রিঙে,
গিসিক রাইঙেআ বিকোন, উয়া আচিক মিচিক্কো।
নিক্কামিং বিনি আনদালে সিম্মা মিক্রোনকো,
বিনি গিৎচাকস্রাঙআ খু’চিলনি খাদিংস্মিতা
গিৎদকনি রিব্বকবা হানসেঙআমিং বিমুং
সাল থেংসুয়াবা বিনি পে’ও নাঙআমিং,
ব্রিঙো থিম্মে জাদাসিক্কে, নিয়ামিং আঙআ বিকো
দাসাল গিসিক রা’আ বিকোন,
উয়া আচিক মিচিক্কো
খিন্নামিং বিনি জা’থেংও নূপুর গা’ম্মাকো
জাকগ্নিংও সাংগংনি রিনিঝিনি,
বিনি রি’ঙগুয়া খিন্নাথুয়া গীতনি সুররাং
র’ঙখু’চাকমিং আ’ব্রিরাং।
আক্কিয়ামিং গিসিকো সিল্লা নমিলনি বিমাংকো
বিনি মিক্খাঙগিত্তান,
মিক্খা ওয়াসিসিয়া ইয়া আনথামোবা
গিসিক রা’আ বিকোন, উয়া আচিক মিচিক্কো।
বিয়া দঙামিং আ’ইগিজা আরোঙ্গানি নমিল
দা’ওবা বিকো আংআ আ’ইগিজান দংজক,
বিকো আঙআ আ’মজামিং আ’ইনা,
গিম্মাই খাৎনোখোন ইন্নে আঙআ খেন্না;
ইন্দিও জামানোন রিয়াংজক বিয়া
আব্রিনি রামাকো দো’য়ে,
বিনি কাত্থাকোন গিসিক রাইঙেআ দাসাল
উয়া আচিক মিচিকক্কো।
অনুবাদ-
♦♦♦ সেই আচিক মেয়ে ♦♦♦
দেখেছিলাম তারে এক গোধূলি লগনে
মেঘালয়ের ঐ গারো পাহাড়ে,
লাল দকমান্দায় তারে লেগেছিল বেশ
ঝিরিঝিরি বাতাসে তার উড়ছিল কেশ;
নুপূর পায়ে করছিল সে নৃত্য, প্রণয়ের গান গেয়ে,
মনে পড়ে তারই কথা, সেই আচিক মেয়ে।
দেখেছিলাম তার আঁধার কালো দুনয়ন
তার গোলাপী ঠোঁটের সুমিষ্ট হাসি
গলায় ঝুলানো রিব্বক দুলছিল তালে তালে,
সূর্যকিরণ ছুঁয়েছিল তারই নিটোল গালে।
ঝোপের আড়ালে হয়ে আনমনা,দেখেছিলাম তাকে চেয়ে;
আজও মনে পড়ে তার কথা, সেই আচিক মেয়ে।
শুনেছিলাম তার পায়ে নূপুরের নিক্বণ-
কোমল দুটি হাতে কঙ্কণের রিনিঝিনি,
সুরলা কণ্ঠে গেয়ে যাওয়া তার গানের সুরমালা,
দূর-পাহাড়ের গায়ে তুলছিল প্রতিধ্বনি।
একেঁছিলাম মনে রাজকন্যার ছবি, তারই রূপ দিয়ে;
বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায় মনে পড়ে তার কথা, সেই আচিক মেয়ে।
সে যে ছিল অচেনা পাহাড়িকা
আজও আমার মনে থেকে গেল অজানাই,
জানতেও চাইনি আমি তার কথা পরিচয়,
যদি হারিয়ে যায়, তো মনে লাগে ভয়।
কিন্তু পরক্ষণেই চলে গেল পাহাড়ি পথ বেয়ে,
তারই স্মৃতি আজ পড়ে মনে, সেই আচিক মেয়ে।
⋅⋅⋅⋅⋅⋅⋅⋅⋅⋅⋅⋅⋅⋅⋅⋅⋅⋅⋅⋅
♦♦♦ মাৎচোত্তা সময় ♦♦♦
সকবাজক দা’সাল সাম্বাও না
ওয়াত্তে রিয়াঙআনি সময় সাল
রা’চাকনান নাঙগেন আ’গিলসাকনি নিয়ামকো
ইন্দিও বা ইয়া জাঙ্গি ওয়াত্তে রিয়াঙনা আ’মজাঙআ।
বাৎচিকিন বা দাকচাকা, বাৎচিকিন আনথাঙ মান্না,
হিনি হিসাবকো রা’রিকনা মানজাজোক,
দা’ওবা ইয়া সময়ও, সিয়া সাল্লো
বনদাপানিবা দংজা, মানদাপানি দংজাজক।
আ’গিলসাক্কো ওয়াত্তে রিয়াংনা নাঙনো দা’সাল
বে’নো দঙআ জাঙ্গি দাও দিকদিকসা,
বন্নাজক হাগিকসাকনি দিমদাল খা’ল্লা
বে’নকো ওয়াত্তে খাৎনাজক ইয়া জাঙ্গি।
গিসিকনি দিমদাক মান আরো মান্নাস্কানি
ব’নচোতনাজক উয়া দাসাল,
থাঙআনি ইয়া আগিলসাকো, আঙনি গিসিকো
গাম্মেংজক,
মাউচোত্তানি গীত।
অনুবাদ-
♦♦♦ বিদায়ের সময় ♦♦♦
ঘনিয়ে এলো হৃদয় মাঝারে
বিদায়ের শেষ সময়, শেষ দিন,
মেনে নিতে হবে বিধির বিধান
তবুও এই মলিন হৃদয় হতে চাই অমলিন।
কত কিছু দিয়েছি, কত কিছু পেয়েছি
পারলাম না রাখতে এই জীবনের হিসাব,
তবুও এই বিদায়ক্ষণে, মৃত্যুর আগমনে
নেই কোন ক্ষতি আমার, নেই কোন লাভ।
ভূবনের মায়া ছেড়ে যেতে হবে আজ
দেহে আছে এই প্রাণ আর কতক্ষণ,
শেষ হবে স্বপ্নের লুকোচুরি খেলা
চলে যাবে ত্যাগ করে সাধের এই জীবন।
মনের যত চাওয়া-পাওয়া, অভিলাষের
হবে তার চির অবসান,
সূখের এই দুনিয়াতে আমার হৃদয়ে
ভেসে আসছে শেষ বিদায় সুরের গান।