[ভাকিফ সামেদৌলু (৫ জুন ১৯৩৯-২৮ জানুয়ারি ২০১৫) আজারবাইজানের একজন প্রতিষ্ঠিত কবি এবং নাট্যকার। তিনি আজারবাইজানের রাষ্ট্রীয় কবি ছাড়াও ‘জনকবি’র খ্যাতাব অর্জন করেছেন এবং পার্লামেন্ট মেম্বার ছিলেন। মূলত আজারবাইজানি ভাষা, রাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি তাঁর কবিতায় উঠে এসেছে। আজারবাইজানি সিরিলিক হরফে লেখা হয়ে থাকে। আজারবাইজানি ভাষার কিছু জনগোষ্ঠি এখনো ইরানের ঐতিহাসিক শহর তবরিজ এর আশেপাশে বসবাস করেন। তবরিজের আজারবাইজানিরা মূলত ফার্সি লিপিতেই লিখে থাকে। এই কবিতাগুলো (আজারবাইজানি) সিরিলিক লিপি থেকে হিন্দিতে অনুবাদ করেছেন দিল্লীর জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুর্কি ভাষার ছাত্র নিশান্ত কৌশিক। দুর্ভাগ্য হলো যে, ইংরেজী ভাষায় ভাকিফ সামেদৌলু সম্পর্কে তেমন কিছুই পাওয়া যায় না। এই কবিতাগুলো হিন্দি সাহিত্যের ছোট কাগজ সদানীড়া থেকে নেওয়া হয়েছে।]
১.
আমি নই!
ঈশ্বর যে আমাকে বিশ্বাস করে না।
বিন্দু পরিমাণ ভরসা করেনি তখনও
যখন রক্তগঙ্গা বইয়ে ছিলাম
কিন্তু আকাশ যখন শিশুর মতো
খিলখিলিয়ে হাসে অথবা
যখন কেউ সমুদ্রের উত্তাল জলরাশি
দেখে বলে, ‘কী অপূর্ব এই পৃথিবী’
ঠিক তখনই; আমি নই!
সে আমাকে বিশ্বাস করে।
২.
পথ দীর্ঘ অথবা ছোট
তাতে কী আসে যায়
তুমি কোন দেশের
কোন সড়কে পথ হারিয়েছ
হাজারো দেশ
হাজারো ভাষা,
তাতে কী আসে যায়
তুমি কোন দেশের, কোন ভাষায়
নীরবে সাধনা করছ?
৩.
কোথায় আছি আমি!
আছি কোথায়? বল আমাকে
একপলকের জন্য হলেও
আলো দাও এদিকটায়
এইটুকু খবরই যথেষ্ট যে,
আমি কোথায় আছি
ভালই যেনো মুক্তি না পাই
এই জায়গা থেকে।
৪.
দেখ!
আবারও শুরু হয়েছে আমার অস্থিরতা
আবারও সেই আত্মিক ভাবনা!
কে আমাকে চায়? কার প্রয়োজন আছে?
হে খোদা?
আর কত দরজা কড়া নাড়তে হবে
এই বয়সের উঠানে
আচ্ছা আমি কি অন্ধের
হাতে গুঁজে দেওয়া কোনো ছবি?
৫.
ভয় হয়
যদি আমার কাছে একটি বাতি থাকতো
তাহলে কিছুটা হলেও উষ্ণতা মিলতো
গরমে
যদি বিশ্রামের জন্য
গাছের ছায়া হতো মাথার উপরে
এই পৃথিবী…
যদি অন্য এক পৃথিবী হতো
যেটা আমাকে লেপ্টে নিত নিজের ভেতরে
৬.
অনেক গাছ পঙ্গু হয়ে গেছে
এই শীতে
কিছু জঙ্গল পেয়েছি বসন্ত থেকে
হাত-পা নেই
পাতাগুলো শিশুদের মতো নিষ্পাপ ছিলো,
গোলমাল করছিলো
নদীও জেনে গেছে
সবেমাত্র কেটে গেছে ভয়।