Home » আয়না দেশের জাদুকরী ।। রহিত ঘোষাল

আয়না দেশের জাদুকরী ।। রহিত ঘোষাল

 আয়না দেশের জাদুকরী
মাঝে মাঝেই কোথায় যাও আফসানা?
বাসের শেষের সিটে বুকের কাছে ব্যাগ জড়িয়ে?
নীলক্ষেতে এখন গোধূলি।
শহর থেকে নিরুদ্দেশ,বেনি দুলিয়ে দুই দিকে দুটো।
কাগজের পাখি রেখে এলে সেবার সে ছেউড়িয়া।
আমি তোমার ঠোঁট হাতরাব অন্য কারোর ছাদে
যতদূর ততদূর চোরকির মতো ঘুরে বেড়াও।
নাকি আরেকটা বন্ধের আগে দেশের বাড়ি কুমিল্লা ফিরে যাচ্ছ?
ওখানে উঁচু বারান্দা থেকে বৃষ্টির মেঘ দেখতে পেলে উঁচু খোঁপা বেঁধো।বার্তা পাঠাইও।
উজ্জীবনী জীবনে সর্বনাশী মেঘ দেখলে বার্তা পাঠাইও।
তোমার টবের গাছটা শুয়ে আছে ক্লান্ত তোমার ছোঁয়া চেয়ে।
সদ্য ঘুম থেকে উঠে আমায় উড়ন্ত চুমু পাঠিও ।
আমার আয়না দেশের জাদুকরী।।

•••••••

✿ চরাচর
বুকের আঁচল খসে গেছে পর্যবেক্ষণযোগ্য
মহাবিশ্বের ওপারে।
নীহারিকার পরে আমাদের
অন্তঃপ্রস্রবণে স্নান।
বলাকার পিঠে মোহিনীশক্তি সব ভগ্নাশা
প্রচ্ছন্নবেশে এক প্রোষিতভর্তৃকা।
শিশিরাঙ্ক বয়ন করে ধ্রুবলোক।
কুহকী নৃমুন্ডমালা ভূষণ,
বহুপ্রসবিনী স্বর্গঙ্গা।।

•••••••

✿ স্ফুটোন্মুখ
রাত্রির সাথে নেশার একটা অজাচার সংক্রান্ত সম্পর্ক আছে।
একটা হাসপাতালে সব থেকে বেশি উজ্জ্বল
জায়গা হচ্ছে মা ও শিশু বিভাগ।
আলো দুই প্রকার কাফকা আলো ও মৃত্যুর
আলো।
যতদূর অবধি জলাভূমি ভরিয়ে মাটি ফেলা
হয়েছে তত দূরই মানুষের এটোকাটা ছড়ানো
আছে।
মুক্ত জলের জলাশয় স্ফুটোন্মুখ লাভা প্রবাহ।।

•••••••

 দূরবীন ও জলচারী
চোখের পাতার চ্ছল চ্ছল শব্দ,
কিছু কিছু ভোরে বাজে স্বপ্ন আসে,চিহ্ন?
যখন আমাদের উঠোনের পেয়ারা গাছটা কিশোরী ছিল,
বর্ণিল ছিল বাজের আলো।
সেই কবেকার শেকড়,বৈতরণী,
গলন্ত লোহার মানুষ।
ব্যানানা চিপস খেতে খেতে শান দেওয়া ঘাটের
কূলে টেলিপ্যাথি-স্পৃহা।
কিছু অক্ষর মধ্যরাত্তিরে মুদ্রিত,
কংক্রিটের আর্তনাদ উপশমহীন,
তোমার হাতের তালুতে তবু লিখেছি স্তোত্র,
অনুচক্রী তুমি তখন বাটন ফোন খোঁচাতে খোঁচাতে
হাতে তুলে নিয়েছিলে দূরবীন।
আমি তোমার ওম থেকে রশ্মি চেয়েছি জড়াতে।।

রোহিত ঘোষাল

দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জ এলাকায় ১৯৯০ এর ৯ অক্টোবর রহিত ঘোষালের জন্ম,সেখানেই শৈশব ও কৈশোর ব্যয় করেন। লেখালেখি করছেন ২০০৭ সাল থেকে। জীবনের বিচিত্র সব শিল্প সংস্কৃতি সংক্রান্ত কৌতূহল ও স্বপ্ন মেটাতে ও বাস্তবায়ন করতে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশুনা কলেজ অব্দি। বিভিন্ন রকম পেশা বদলে বর্তমানে একটি ব্যক্তি উদ্যোগের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। কবিতা লেখার আশেপাশে অভিনয় করেছেন মঞ্চনাটক ও অন্তরঙ্গ নাটকে। গান গেয়েছেন এবং লিখেছেন নানা বাংলা ব্যান্ডের দলে,অবসরের ছবি আঁকতে ভালোবাসেন আপন মনে। প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই- "পীড়িত অববাহিকা" প্রকাশ পায় ২০০৩ সালে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ভাষা
Scroll to Top