কন্টাক্ট লিস্ট
কন্টাক্ট লিস্টে হারিয়ে যাওয়া নম্বর গুলো
একদিন জঙ্গলের জোনাকি আলোয় খুঁজতে
পাহাড়ের কাছে গিয়েছিলাম।
নদী খাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে কালো
পাহাড় পেরিয়ে সবুজের কাছে গিয়ে
চেয়েছিলাম তাকে।
ফিরিয়ে দেওয়া যায় কি !
হ্যাঁ– নিজেকে ভীষন জব্দ করার জন্য,
ডিলিট করে দিয়েছি। ডিলিট করে দিয়েছি, চ্যাট হিস্ট্রি, কন্টাক্ট নাম্বার। কিন্তু গোবেচারা স্মৃতি—
সে কিছুতেই মনের পাতা থেকে মস্তিষ্ক তরঙ্গ
ছেড়ে খান খান হয়ে যায় না।
আমৃত্যু এ ভার বহন করার থেকে
নিজের খননকার্য রচনা করা সহজ মনে হয়।
গোধূলির কাছে চেয়েছি তার নাম।
পথের পাশে পড়ে থাকা নুড়ি ,পাথর
মাইলস্টোন সবার কাছে চেয়েছি।
শেষ পর্যন্ত এসেছি ‘সূর্য’ তোমার কাছে।
তোমার কাছে এসেছি ফিরিয়ে দেবার জন্য
ওই একটা– ওই একটা নাম ।
কিন্তু আজ বুঝলাম বৃথা সন্ধান, বৃথা
এ মরুভূমিতে তৃষিত আত্মার কিছু স্বপ্ন বুনন।
তোমার তেজ যে ঝলসে দিল আমার
হলুদ পাতা, আমার লাল গোলাপ।
আমার হৃদপিণ্ডের জমে থাকা প্রত্যেকটা নিঃশ্বাসকে।
আর সাথে দেখলাম কিভাবে তুমি পুড়ে
ছাই হয়ে গেলে। আমার শিরা ধমনীতে
আমার নাভিমূলের শেষ অস্থি বিসর্জনে।
অপ্রকাশিত
কথার পাহাড়
প্রকাশ করিনি কখনো
ভালোবাসি
বলার দায় এড়িয়েছি
দাম্পত্য
এক অর্নগল চলা গাড়ি
কষ্ট
চাপা পড়ে গেছে মাটিতে
হাসি
দমকা হাওয়ায় ভাসার মত
বিদায়
কিছুটা অপ্রকাশিত থাকলো
মেয়েটা ভয় পায় না
মেয়েটা ভয় পায় না বলছে,
মেয়েটা অনুরোধ রাখতে পছন্দ করে না।
মেয়েটা মাথা উঁচু করে ঘোষণা করতে পারে—
সামনে জনতা হাততালি দিক বা না দিক্,
হাজার হাজার ক্যামেরা নানান রকম ছবি
তুলে ধরুক বা লেন্স গুলোকে বন্ধ করেই রাখুক।
তাতে কিছু যায় আসে না—
মেয়েটা কেমন অবলীলায় বক্তব্য রাখে,
মেয়েটা এমন ভাবে বলতে পারলো!
মাথার উপরে এমন কিসের ছাতা আছে?
বুকের ভেতর কতটা সাহস বদ্ধ আছে?
ওর কি তবে বদলি হবার ভয় নেই!
ওর কি তবে হারিয়ে ফেলার ভয় নেই!
মেয়েটা এমন করে প্রত্যাখ্যান করতে পারে!
কোন ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত সে!
এরকমই কিছু বিচ্ছিন্ন মুখ গর্জে উঠুক একবার।
যখন সব মেয়ে এমন করে বলতে পারে
আর কোন ‘অন্যায় অনুরোধ’ রাখবো না,
আর কোন সাজানো তাসের মহড়া হব না।
ইচ্ছাপত্র
১.
‘ইচ্ছাপত্রে’ লিখে দিয়ে যাব —
কোনোও ভালোবাসার দুঃখজল
যদি নদীর মতো ভাসমান নীরব
হাহাকারকে শুষে নিতে পারে,
সেদিন মরু চিত্তের মাঝে
খোদাই করা হবে নতুন প্রস্তর লিপি।
২.
ইচ্ছেপত্রে লিখো
ওরা যেন ভ্রমণ করতে পারে
পায়ে নাগরাই জুতো পরে।
একাকীত্ব,শূন্যতা অন্য কোন দেওয়ালে
চাপা পড়ে থাকে। অন্ন,জল ,আলো ,বাতাস
একসাথে মিলেমিশে লেখে যেন ভাগ্যলিপি।
প্রজাপতি মন
প্রজাপতি উড়ে গেল,
বোধহয় ফুল ফোটার খবর পেয়েছে তারা
জনপদ অগোছালো,
সাবধানী নিরাপদে রাস্তা পার হয়ে যারা।
চাঁদ বলেছে কবে!
দুঃসময় একা একা রাত্রি জাগার কথা—
বিড়ম্বনার পাঁজরে,
চাপানুতর চলেছে অস্ফুটে রূপকথা।
তার মাঝে দুটি ফুল
একান্তে গন্ধ ছড়ায় অবকাশ সাথী পেয়ে,
করেনি তো ভুল
কিছুটা সময় একসাথে বাঁচবার তরী বেয়ে—
মৌ চট্টোপাধ্যায়
পেশাগত দিক থেকে শিক্ষিকা, মালদায় মশালদিঘী শিবব্রতী বিদ্যাপীঠের একজন অঙ্গ। তবে আসলে বাসিন্দা কলকাতার বেলগাছিয়া দত্ত বাগানের। পড়াশোনা পেশাগত জীবন সাংসারিক জীবন সবকিছু সামলে 'কলমটাকে' শেষ পর্যন্ত আঁকড়ে আছেন ।





