Home » চাকমা ভাষার কবিতা ।। সুজালো যশ

চাকমা ভাষার কবিতা ।। সুজালো যশ

 ভিদে উদি
ক্রমশ মরে শিম পুককুনে বেড়াদন্দি
তো-ও মর ঘুম ন’ভাঙে
ঘুমোত্তুন জাগি নেই চাঙগে মর হিয়েত
এক হত্তা-ও এ-রা নেই
সর’ল অইনেই পুরি আহগঙ হয়েকক্কু বুগো আড়লোয়…
মুই উড়িবের চাঙর পত্তি হেবত
হিন্তু মর দো আনি-ত চের আনা-ও বল নেই
যেদক উড়িবার চাঙর সেদক
ম-দো আনি-র বল চাক্কোরোই অই
পিত্থিমি বুগত্তুন ভিদে উদি জাঙর।

…………
অনুবাদ

 মূলোচ্ছেদ
সমস্ত শরীর আমার শিমপোকায় মুড়িয়ে নিচ্ছে
তবুও ঘুম ভাঙছে না চোখের
ঘুম থেকে জেগে দেখি শরীরে এক টুকরো মাংসও নেই
মৃতদেহ হয়ে পড়ে আছি
আমার কয়েকটি বুকের হাড় নিয়ে
উড়ে যেতে চাই বারবার
অথচ আমার ডানায় এক ফোঁটা শক্তিও অবশিষ্ট নেই
যতবার উড়তে চেয়েছি ততবার আমার শক্তিক্ষয় হয়ে
হারিয়ে গিয়েছি পৃথিবীর বুক থেকে…

••••••••••••

❀ এগ দমাহ্ এহরা
এগ দিন্যে চের ঠেঙ্যে বাঘে আর দি ঠেঙ্যে বাঘে
অহ্ রিঙো শিরে তানাতানি গত্তে গত্তে ওরান ওনেয় চান্দে
এগ দমাহ্ও
গিদি হুত্তির এহরা নেই চেরোহিত্তে নিবুলি আন্ধার্ চোঘোট…

…………
অনুবাদ

❀ এক টুকরো মাংস
একদিন চার পাওয়ালা বাঘ আর দুই পাওয়ালা বাঘ
হরিণের মাথা টানাটানি করতে করতে…
হঠাৎ তারা লক্ষ্য করে তাদের সমস্ত শক্তি ক্রমশ কমে যাচ্ছে আর
শরীরের সব মাংস ক্রমাগত ঝরে পড়ছে
এভাবে সমস্ত মাংস পড়ে গিয়ে যখন এক টুকরো মাংসও স্বজনের নেই
তাদের চোখে তখন শুধু চারদিক অন্ধকার আর অন্ধকার…

••••••••••••

✿ কালা বিলেয়
ভা-রি নাহান্দার ইক্কো বে-ঈঞ্জেবি বাঝি-র!
ছিধি যার এগামার–এঝ তার বে-ঈঞ্জেবি ছাবা।

জিলানত তার ধুলের কেদাফল।
আঙি যার কোচপানার জুনিপ’র।
আবিধি ছন্দভাচ আজাগরি আঘে-
কন মুলুগর উদোনেয়্যে পাদারত।

হালিক, কালা বিলেয়র হাচ্ছ্যেক
মিঝি আঘে এঝ-
হা্রে হা্রে, কেশে কেশে, চিতো হুলুঙ রিবেঙত।

…………
অনুবাদ

✿ কালো বিড়াল
অতিশয় নগণ্য এক হিসাবের মৃদঙ্গ
বাজিয়ে চলছে ঘৃণার ছায়া

জিভে ঝুলানো মাকাল বন
নিয়ে গেছে ভালোবাসার জোনাকবিভা
তবু অহেতুক প্রলাপ কাঁধে জড়িয়ে আছে

যুগের সীমাধারা
তারা রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে
স্বভাবে হয়েছে কালো বিড়ালের মত।

••••••••••••

❀ অক্ত
বাশপাদা হবরর অসূগত ধুলি ধুলি
বান্দর’ ধক ওই যেয়্যেগোই যে অক্তআন-
ঠেঙত কাঝি বানি পুতুল বানেয় তারে রাগেইও।

অক্ত অক্ত বে-রঙা আগাঝ হা্রেয় গেলেগোই-
পিত্তিমীর বোয়েরত-
নুও কিঝু হবর জনম লয়; তুমি চেইয়ো।
বোয়্যের(উড়গো)হবর তারে কয়;তুমি বুঝি লোইয়ো।

ফেনা ফেনা উদোনেইয়্যে সাগরর গঙারত,
শুগেয় গেলগোই হে্ইল মাদি-পানির অঝমী রস।
পরান তোরেবঙ কেনে?
দাঙদাঙ্যে দাঙাযেয়্যে মোনো পাদারত?

…………
অনুবাদ

 হে সময়
গুজবের ব্যাধিতে ঝুলে বানর হয়ে গেছে যে সময়
তাকে সীমাবদ্ধ পুতুল করে রেখো
কখনো
ফ্যাকাসে আকাশ হারিয়ে গেলে
পৃথিবীর আত্মায় বানাও কিছু খবর
দেখবে
ফেনিল অতলান্তিক স্রোতে ভেসে গ্যাছে প্রকৃতির ভারাক্রান্ত জারক রস।

••••••••••••

✿ শহ্’অর’ ঝুভত্তলে
রানজুনি রঙর রাঙা শহ্’অরত
ঝভুর কিঝু গাছ আগন;
বিদি যেয়্যে দিনর বিজক্কানরে
তারা’ আর’ নুওগরি ঈধোত তুলিব্যের ন চা-ন।

তারা’ শিঙোরত হে্লান দিলেগোই-
বানা’ মোরমোজ্যে বিজগর পজ্জন শুনান।

বিজগর পজ্জনত –
মা আর মা’র চোগোর ছধক ভাঝি উধ্যে!
চোগোর ছধগত-
গোধাআনর আরুক ফুধি উদ্যে!

গোধাআনর ফুধো ফুধো পানির গোঙারত-
লুজোই হিলর সিএডিসি,
হিল-তিবিরে রেজ্জোর পেজারতল,
অরুনাচলর শহ্’অর জনম লোয়্যে।

এ শহ্’অরানির সমারে-
অজল ওই উধঙর লাড়ে লাড়ে।
তারা’লগে সূধোনাল গাধাঙর-
ঈধোমেয়্যের কানসূখ পজ্জন সাঝাঙর।

…………
অনুবাদ

✿ শহরের বৃক্ষতলে
রামধনুর মত রাঙা শহরে
কিছু বৃক্ষ আছে
তারা অতীতকে ভুলে যেতে চায়।
সেসব গাছের নিচে গেলে
ইতিহাসের গল্প শোনায়।
এই গল্পে আছে আমার মা ও মায়ের চোখে
বাঁধের কয়েকটি জলের ফোঁটা।
সেই কয়েকটি জলের ফোঁটায়
তৈরি হয়েছে নতুন শহর
যার একেকটির নাম মিজোরাম,ত্রিপুরা,অরুণাচল।

এই শহরে আমরা ধীরে ধীরে বড় হতে থাকি
ক্রমাগত রামধনুর মত রাঙা শহরের
নতুন নতুন গল্প শুনি।

Ajit Dash

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ভাষা
Scroll to Top