ভুটান: প্রকৃতির কোলে।। মাহফুজা সিদ্দিকা

বান্ধবীর হঠাৎ ফোন, একটা লিঙ্ক দিচ্ছি তাড়াতাড়ি দেখ । ফোন রেখে লিঙ্কটা দেখে নিলাম- একটা ট্রাভেল এজেন্সি ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে। পড়ে বুঝলাম-পাশ্ববর্তী দেশ ভ্রমণ । আমরা দুজন এমনিতেই একটু ভ্রমণ পিপাসু । কোথাও কোন বেড়াতে যাওয়ার কথা  উঠলে আমরা সবার আগে লাফিয়ে উঠি। কিন্তু সেগুলো ছিল দেশের ভেতরে…..আর এখন তো দেশের বাইরে তাও আবার এজেন্সির মাধ্যমে যা এইবারই প্রথম। একটা কেমন জানি শঙ্কা ও ভয় কাজ করছিল—নারী বলে হয়তো এমনটা হওয়ার । নানা রকম ভাবনা চলে আসতে থাকে মনের ভেতর । নিজেদের মধ্যে ছিল অফুরন্ত ইচ্ছাশক্তি ও অটুট বিশ্বাস। সাহস করে এজেন্সির সাথে কথা ফাইনাল করে ফেললাম। মোট ২২ জনের একটি গ্রুপ । ভিসা  সংক্রান্ত বিষয়গুলো এজেন্সি সেরে ফেলল। সব ব্যস্ততা সেরে বেড়িয়ে পড়লাম। সকাল ৭টায় আমরা পৌঁছালাম বুড়িমারি বর্ডার। ফ্রেশ হয়ে সকালের নাস্তা সারতে সবাই চললাম বিখ্যাত চাচীর দোকানে। বলে রাখা ভালো বুড়িমারি বর্ডার হওয়ার পর এই চাচী প্রথম টুরিস্টদের জন্য খাবার দোকান দেন। পৌঁছাতে দেরি হবে বলে ভাত আর ছোট মাছ দিয়েই সকালের নাস্তা সেরে নিলাম। । বুড়িমারি বর্ডার থেকে জওগা বর্ডার যেতে ৫-৬ ঘন্টা সময় লাগে।

সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ আমরা জওগা বর্ডার পৌঁছায় । তখনও বৃষ্টি হচ্ছে মুষলধারে। ভুটান ইমিগ্রেশনে যাই কিন্তু টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে ভিসা মিলল না। ঐদিন আমরা জওগা বর্ডারে (ভারত) একটি হোটেলে রাত কাটালাম। পরদিন সকালে নাস্তা সেরে ইমিগ্রেশনে চলে গেলাম আবার। আমরা যে গাড়িতে বুড়িমারি বর্ডার থেকে এসেছি ঐ গাড়িটাই ভুটান পর্যন্ত রিজার্ভ করা। এ  যেন চোখ ধাঁধানো অবস্থা। আমাদের দেশের ঠিক উল্টোটা। চারদিকে সবুজ আর সবুজ, পাহাড়, গাছপালা। জনমানব অনেক কম। পাহাড়ের গা ঘেষেঁ রাস্তা, খুব রিস্কি। ড্রাইভার হিন্দি গান বাজাচ্ছেন গানের রিদমে গাড়ি পার হচ্ছে এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়। কোন প্রকার অস্থিরতা নেই এখানে। রাস্তায় পরপর গাড়ি, কিন্তু হর্নের শব্দ শোনা যায় না বললেই চলে। খেয়াল করে দেখলাম রাজপথে কোনো সিগন্যাল বাতি নেই। সেখানে কোনো ভিক্ষুক নেই এবং নেই কোনো গৃহহীন মানুষ।

ভুটান বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী দেশ। এশিয়ার ‘শান্তিপ্রিয় দেশ’ মনে করা হয় ভুটানকে। দেশটির পশ্চিমে হিমালয়কন্যা নেপাল, উত্তরে তিব্বত এবং পূর্বে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ। স্থলবেষ্টিত দেশ ভূটানের আকার, আকৃতি ও পার্বত্য ভূ-প্রকৃতি সুইজারল্যান্ডের সদৃশ বলে দেশটিকে অনেক সময় এশিয়ার সুইজারল্যান্ড ডাকা হয়। ভূটানের মাতৃভাষা জংখা (Dzongkha) কিন্তু স্কুল কলেজে ইংরেজি ভাষাতে শিক্ষা দেয়া হয়। এদের রাষ্ট্রীয় মুদ্রা নুলট্রাম কিন্তু ইন্ডিয়ান রুপিও এখানে বিনিময়যোগ্য।

একানকার লোকেরা ট্র্যাডিশন্যাল পোশাক পরে অফিসের কাজ সামলায়। ছেলেরা ‘ঘো’ আর মেয়েরা ‘কিরা’। আমাদের ড্রাইভারও জাতীয় পোশাক পরা। তার দেশের প্রতি অনুগত দেখে আমি মুগ্ধ। শুধু তাই নয় ভুটানিরা খুব পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকে তার নমুনা পেলাম ড্রাইভার আমাদের একটা বড় ব্যাগ কিনে বলল, আপনাদের সব ময়লা এখানে রাখবেন। তাদের দেশের ও দেশের নিয়মকানুন এর প্রতি শ্রদ্ধা দেখে নিজেদের খুব ছোট মনে হলো।

পারো হচ্ছে ভুটানের অন্যতম পর্যটন স্থান। এই শহরেই ভুটানের একমাত্র বিমানবন্দর। পৃথিবীর সবচেয়ে জটিল অথচ নয়নাভিরাম বিমানবন্দর! ভুটানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এটি। যতদুর নজর যায়, শুধুই পাহাড়— সবুজ, রুক্ষ, ঘোলাটে নীল আর একদম দূরে, প্রায় আকাশের কাছে, তুষারাবৃত পর্বতশিখর। বিমানবন্দরের দফতরগুলির রং গাঢ় সবুজ আর সাদা আর প্রশস্ত রানওয়ে সম্পূর্ণ কংক্রিটের তৈরি। মাঝে মাঝে চোখে পড়ল কাগজে লেখা কিছু গাছে, সেতু,পাহাড়ে ঝুলে আছে। তাদের বিশ্বাস, যেসব পাহাড় বা ভূমি ঝুকিপূর্ণ সেসব জায়গায় কাপড়ে দোয়া লিখে লাঠি বা দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখলে সেসব জায়গা ধসে পড়বে না।

বিকাল ৩টা নাগাদ চলে এলাম মুল পারো শহর । শহরের মধ্যে চলাফেরা করলে মনে হয় না পাহাড়ি দেশ। সমতল ভূমির মত রাস্তা। শ্রীনগর ভ্যালির মত। এ শহরকে বলা যায় “Queen of Bhutan”। আমরা সময় স্বল্পতার কারণে হোটেলে না গিয়ে সরাসরি চলে গেলাম এক অ্যাডভেঞ্চারের জায়গা নাম হচ্ছে টাইগারের নেস্ট মঠ । যাদের ট্রেকিং এর নেশা আছে তাদের জন্য এটা একটা চ্যালেঞ্জ। টাইগারের নেস্ট মঠ পারো টাকস্টাং নামে পরিচিত, ভুটানের সবচেয়ে স্বীকৃত স্থানগুলির মধ্যে একটি। নেস্ট মঠটি একটি খাড়া বাঁধের উপর অবস্থিত, ৩ হাজার ৮২০ মিটার (১০ হাজার ২৪০ ফুট) হিমালয় পর্বতমালার পাশে এবং যা মাটিতে ৯০০ মিটার দূরে অবস্থিত।

টাইগারের নেস্ট মঠ, তিব্বত থেকে পিছনে এই স্থানটি। কথিত আছে, ১৬৯২ সালে গুরু রিন পোচে তিন বছর, তিন মাস, তিন দিন এবং তিন ঘন্টা গুটি গুটিয়ে একটি বাঘের পিছনে গিয়ে ধ্যান করেছেন। যাতে এর মধ্যে বসবাসকারী মন্দ ভূতদের দমন করতে পারে। তখন থেকেই এই জায়গার নাম ‘টাইগার্স নেস্ট’। বৌদ্ধদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র জায়গা। অনেক বিখ্যাত ধর্মাবলম্বী এটিতে ধ্যান করার জন্য ভ্রমণ করেন। এখন, এই মঠের মধ্যে মন্দিরে বসবাসের জন্য চারটি মন্দির রয়েছে।

গাইড আমাদের বুঝিয়ে দিলেন কীভাবে যেতে হবে। পাহাড়ে উঠানামা করতে ৫-৭ ঘন্টার মত সময় লাগে। টাইগার নেস্ট এর পাদদেশে ভুটানিরা দোকান দিয়েছে তাদের তৈরি জিনিসপত্রের। টাইগার নেস্ট উঠার জন্য এখানে ছোট লাঠি ভাড়া দেয়া হয়। লাঠি প্রতি ৫০/- রুপী। আবার ফিরে আসার পর তা ফেরত দিতে হয়। যারা উৎসুক ট্রাকার তারা উঠতে শুরু করলাম। প্রথমে মজায় মজায় উঠছিলাম কিন্তু যত উপরে যাই ততই উঠা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। ক্ষুধায় অনেকে ক্লান্ত হয়ে পড়ছিলাম। আমাদের কাছে শুকনো খাবার ও পানি ছিল তাই দিয়ে জিভ ভিজিয়ে নিলাম। অনেকে উঠতে না পেরে ফিরে গেল। টাইগার নেস্ট ও সমতলের মাঝামাঝি একটি ক্যাফেটেরিয়া আছে। এই ক্যাফেটেরিয়ায় যা খাবেন তার মুল্য ৫০০ রুপী। এমনকি চা বা কফি হলেও। এখানেই সেরে নেয়া হলো দুপুরের খাবার । সবচেয়ে ভালো লেগেছে পাহাড়ী সব্জী, মরিচ দিয়ে রান্না রেসিপিটা । প্রায় সব খাবারেই অমৃত লেগেছে ক্ষুধা পেটে। আবার হাঁটতে শুরু করলাম। পাহাড়গুলো পাইন গাছ দিয়ে আবৃত। মাঝেমাঝে অন্যরকম গাছ চোখে পড়লো, গাছে পাতা নেই কিন্তু মাকড়সার জালের মত ডালপালা পেচানো। অন্যরকম সবুজ। পাহাড়ের মাটি শীতল অনেক। গাছে গাছে বানর চেঁচামেচি করছে। আমরাই শেষ পর্যটক ছিলাম কারণ দেরিতে উঠেছি ।

এটির সৌন্দর্য এবং অবস্থান মধ্যে অত্যাশ্চর্য। এখানে দাঁড়িয়ে চারপাশটা দেখে নিলাম আর মনের একটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে থাকলাম এত পাহাড় থাকতে বাঘ কেন এই জায়গাটা পছন্দ করেছিল। আসলেই এখানে দাঁড়ালে নিজেকে রাজা রাজা মনে হয় আর রাজার ক্ষমতা সবাইতো দেখাতে চায়। লোকালয় দেখা যায় সরাসরি, সাথে আশেপাশের পাহাড়গুলোও। এখানে চিৎকার দেয়া নিষেধ (মন্দিরে ধ্যানমগ্ন) কিন্তু আমার কৌতুহলী মনকে সামলাতে পারলাম না, জোরে এক চিৎকার দিলাম বাংলাদেশ বলে। আমার ধ্বনি একেক পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে প্রতিধ্বনি হতে লাগল বারবার । তখন ভাবলাম বাঘও মনে হয় শিকারে যাওয়ার আগে এখান থেকে হুঙ্কার দিত।

এবার ফেরার পালা, পাহাড়ের উপরে আসলে বোঝা যায় না অন্ধকার কতটুকু। নিচে নামছি ততই অন্ধকার বাড়তে থাকল। এই পাহাড়ে কয়েকটা কুকুর ছিল । তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতেই হবে। ওদের আতিথিয়তায় আমরা মুগ্ধ । ওরাই আমাদের সমতল অবধী পৌঁছে দিয়েছিল। আমি অবশ্য তাদের ব্যবহারে মুগ্ধ বা অবাকও বলতে পারেন বিস্কুট খেতে দিয়েছিলাম। হোটেলে ফিরে সবাই ফ্রেশ হয়ে আবার বেরিয়ে পড়লাম রাতের পারো শহর দেখতে। সবার গাড়ি রাস্তার বাইরে, কোন চোর ডাকাত নেই। এক কথায় ভুটান দিনে রাতে সমানভাবে নিরাপদ।

পরের দিন রওনা হলাম পুনাখার উদ্দেশ্যে। থিম্পুর তুলনায় অনেকটাই নামা পুনাখার রাস্তা। থিম্পু থেকে পুনাখা যেতে পথে একটি মনোরম স্থান হল “দো চোলা পাস” (dor chula), যেখানে নির্মাণ করা হয়েছে Operation Flush-out 2003-এর নিহত সৈনিকদের সমাধিক্ষেত্র। এখানে মোট ১০৮টি সমাধিক্ষেত্র রয়েছে। এক একটি স্তম্ভের গায়ে অসাধারণ রংবাহারি শিল্পকর্ম। এই জায়গা থেকে এভারেস্ট শিখর দেখার সুযোগ পাওয়া যায় যদি আকাশ যথেষ্ট পরিষ্কার থাকে। কুয়াচ্ছান্ন থাকায় আমরা তা দেখতে পেলাম না।

পুনাক্ষা পৌঁছালাম প্রায় চার ঘন্টায়। ভুটানের সব চেয়ে পুরনো জং হল পুনাখায়। ভুটানের যেখানেই যাওয়া হোক না কেন, মুখ্য আকর্ষণ হল জং। এখানে ধান প্রধান ফসল হিসেবে চাষ করা হয়। পুনাখা এক সময়ে ভুটানের রাজধানী ছিল। ১৯৫৫তে তা থিম্ফুতে স্থানান্তরিত হয়। এখন পুনাখাকে বলা হয় ভুটানের শীত-রাজধানী। জং যেন ইতিহাসের এক একটা অধ্যায়। জং এর এই প্রাসাদে তিব্বতীয় বৌদ্ধধর্মের কাগ্যু গোত্রের দক্ষিণ দ্রুকপা বংশীয়সহ রাংজুং কাসারপানি বংশীয় সাধকদের দেহাবশেষ রয়েছে।

দুই নদী। মো চু আর পো চু! পাহাড়ের কোল ধরে এঁকেবেঁকে চলে গিয়েছে বহু দূর। মো চু নারী আর পো চু পুরুষ। এমনই বিশ্বাস সেখানকার মানুষের। স্থানীয় ভাষায় চু শব্দের অর্থ নদী। পো চু আর মো চু এসে মিলেছে পুনাখায়। পো চু আর মো চু-র মাঝখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে ওই স্থাপত্য। দুর্গের আদলে তৈরি এক ধরনের স্থাপত্য, যেখানে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা থাকেন। কোথাও কোথাও আবার এই জং থেকেই চালানো হয় কিছু প্রশাসনিক কাজকর্মও। যে কোনও জং-এর প্রবেশপথ তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। কাঠ আর লোহার তৈরি বিশাল দরজা। বিশাল উঠোন, বড় বড় ঘর, সর্বত্রই উজ্জ্বল রং আর বৌদ্ধ মোটিফে ভরা। মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে একটা কাঠের সেতু দিয়ে একে যোগ করা রয়েছে। গ্রীষ্মে যখন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা থিম্ফুতে চলে যান, তখন এই জং পর্যটকদের জন্য খোলা হয়। একেবারে ছবির মতো একটা উপত্যকা। যে দিকে চোখ যায় যেন ঘন সবুজের গালিচা পাতা। সারা বছরই নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া পুনাখায়। এই জংয়েই রাজার বিয়ে হয়েছিল ২০১১তে। আমরা একদল গেলাম জং দেখতে আর অন্যরা রাফটিং এ।

পুনাখার একটা বড় আকর্ষণ এখন হয়ে উঠেছে রাফটিং। পাহাড়ি নদীপথে চারপাশের চোখ জুড়োনো ছবির মতো দৃশ্য দেখতে দেখতে এগোনো। রাফটিং শুনলেই যে অ্যাডভেঞ্চারের কথা মনে হয়, তেমন গা ছমছমে ব্যাপার এখানে নেই। গাইডরা পাখিপড়া করে বুঝিয়ে দেবেন কখন কী করতে হবে। শুধু সেটুকু মেনে চললেই হল। খরচ জনে মাথাপিছু এক হাজার টাকা। নদীপথে ১৪ কিলোমিটার যাওয়ার পরে স্থানীয় একটি হোটেলে পোশাক বদলের ব্যবস্থা থাকে। সকাল-সকাল পুনাখা পৌঁছে রাফটিং সেরে চলে যেতে পারেন জং-এ। ঘুরে দেখতে অনেকটা সময় লাগবে। অনেক টেম্পল আছে আশেপাশের গ্রামে। কিন্তু আমাদের দেখার সৌভাগ্য হয়নি। ফিরতে মন সায় দেবে না।  পুনাক্ষাকে বিদায় দিয়ে আমরা গাড়িতে উঠে পড়লাম। থিম্পু আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেল । ভেবেছিলাম ভুটান দেখা শেষ । কিন্তু আরও এক নৈসর্গিক পরিবেশ অপেক্ষা আমাদের জন্য বুঝতে পারি নাই তখনো। সন্ধ্যার সময় পাহড়ের চূড়া, সমতল, পাহাড়ের কোল ঘেষে যেন জোনাকী পোকার মত আলো জ্বলজ্বল করছে । এ এক নৈসর্গিক দৃশ্য । আবার দেখা হয়ে গেল ভুটানের গার্ডিয়ানের সঙ্গে কিন্তু এবার আলো হাতে। উনিও যেন আমাদের বিদায় দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। মনে হচ্ছিল ইস আর কটা দিন যদি থেকে যেতে পারতাম।

ভুটানে যেখানেই গিয়েছি সেখানেই দেখেছি বেশির ভাগ হোটেল ও রেস্টুরেন্ট এর ভেতর এবং বাইরে ঝলমল করছে রাজা-রানির ছবি। এভাবে ছবি আটকে ঘোরা বাধ্যতামূলক নাকি? স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নটা মনে এসেছিল। খোঁজ নিয়ে জানলাম, কোনও বাধ্যবাধকতা নয়, আমজনতা ভালবেসে তাঁদের রাজপ্রতিনিধির ছবি নিজের শরীর ও দেয়ালে আটকে রাখে। রাজতন্ত্রের ধাঁচটা সময়ের সঙ্গে বদলে গেলেও রাজ আনুগত্য কমেনি ও দেশে! তবে সুইজারল্যান্ডের বরফের তৃষ্ণাটা রয়ে গেল মনের এককোণে । হয়তো কোন একদিন বরফের স্বাদ নিতে….

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ভাষা
Scroll to Top