ঘাতক
নিন্দুককে চিনি
জানি গতিবিধির সাইকোলজি
হৃদয় কেটে যাচ্ছে গোপন ছুরিতে
যাকে ফুল দিয়ে প্রতিনিয়ত পূজি
আত্মবিশ্বাস একটা নির্লজ্জ ঘাতক।
ভালোবাসি … ভালোবাসি
হাড় কাঁপা শীত ভোরে হৃদয় পাঁজর কেঁপে উঠলে
তোমাকেই তীব্রতর অনুভব করি
তুমি ছাড়া কাকে আর বুকের ভেতর দুমড়ে মুছড়ে
ভালোবাসি …
ওখানে সব আছে
ওখানে সব আছে
ঘুমের কাতরতার চেয়ে সুখ নেই কিছুতেই
বুকের ভেতর ওম আছে বিস্তর বিশাল
গুটিশুটি হয়ে থাকার মমতা আছে
আছে শামুক শামুক ভাব
হাত পা মেলে ছড়ানো যায় চাইলেই
হঠাৎই গুটিয়ে নেয়া যায় রাজ্য
ওখানেতো সবই আছে
বিল-ঝিল সাঁতরানোর শ্রমে নেয়ে
সবুজ বৃক্ষ আছে ঘনশ্বাস নেবার
ওখানে নিউটনের তৃতীয় সূত্র চলমান
দুইটি বলের মান সমান ও বিপরীতমুখী
এদতসত্ত্বে নিউটন প্রথম সূত্র নিয়ে
স্থির; ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকেন সদরে
আর ওখানেই সব আছে …সব।
আশ্রম
আজ আকাশের মনভারি
বিষণ্নতার বীণ বাজিয়ে অন্ধকারের চাদরে ঢাকছে চতুর্দিক
টপটপ কেঁদে কেটে সারা বৃক্ষপল্লবের সারি
অনন্ত অপেক্ষার পথ সুদূরের আবছায়া দৃষ্টি
স্মৃতির কাঁচুলিতে বন্দী করতলের বৃষ্টি
একটা ছো্ট্ট ফুলঝুরি হলদে সোনালুর ফাঁকে
আশ্রয়ের খোঁজে নিরলস ব্যতিব্যস্ততা
ঝুমবরষার চক্করে হারালে কি আশ্রম থাকে!
শত প্রতিকূলতায় তবু উৎসাদিত মন
নিরেট শক্ত সামর্থসম্পন্ন কিছু আঁকড়াতে চায়।
আবেগের ছলে
স্রোতের বিপরীতে অনুকূল হয় না পরিবেশ
জটিলতার ব্যারিকেড পার হতে হতে
উজানের প্রতিকূলে ফিরতে ফিরতে
ক্লান্ত তটের কিনারে কিনারে ধার গেছে ছুটে
কখনো সাদা কখনো তার বাদামী রঙ
ঢেউ ঢেউ বক্রতায় ফিরে চলে সুদূরে
জল গড়াতে গড়াতে আঁচড়ের চাপ রাখে;
কালশীটে দাগে নুড়ির অভিযোগ
তবু মুক্ত খোঁজা ডুবুরির অনিঃশেষ আবেগ।
এসো … আবারো হংসমিথুন হই
কতোটা পেলে তৃপ্ত মন
জানিনা সঠিক
যা পায় তা বাড়ে ক্রমাগত
শুধু বুঝি এইটুকু
সুখ ও দুঃখ পাখি
পাশাপাশি তবুও চিরদিন
কেউ নয় কারোর দূরত্বে
আজও ভয় গোপন গহনে
ভাবনায় দীপ্যমান মাধুকর উষ্ণতা
সে প্রেম জয়ী অন্তরলোকে
যাকে দেখা যায় না, না যায় ছোঁয়া
অনুভবের অতৃপ্তির ওষ্ঠ স্পর্শে কেবল
দিনের শুরু আর রাতের শুরুতে
টারবাইন হতে থাকে নার্ভাস এ্যাকশনে
খুব বেশি বলতে ইচ্ছে করে
এসো … আবারো উপত্যাকার জলে –
…….হংসমিথুন হই!
সুশিল্প মায়ায় জড়িয়ে থাক হৃদয় যুগল
যতই না না করো ততই আগ্রহ বেশি
নিষিদ্ধ জিনিস আহা !
ডুবলে ডুবে আপাদমস্তকে
না ডুবলে তীরের জলে জলোজল
কোনোটাই যায় না বিফলে
যুদ্ধে কোথায় কে জড়াচ্ছে জড়াক
শুধু চাই না রক্তপাত
ভালোবাসা নিয়ে চিনিমিনি…মানিনা
বিরান বসতি হৃদয় রক্তক্ষরণে
যুদ্ধ হোক মধুর … সুমধুর…মধুরতম
রণাঙ্গণে কেবল একটি জোড় সংখ্যা থাকুক
আপত্তি নেই ভালোবাসার কাঙাল হতে
বারবার আদি ভূমি চাষে ফলবে
ভালোবাসার নীলফুল
অপরাজিতার কাছে মানুষের দায় চিরদিনের
সুমধুর যুদ্ধে সুশিল্প মায়ায় জড়িয়ে থাক হৃদয় যুগল।

রীনা তালুকদার
জন্ম আগস্ট, ১৯৭৩, লক্ষ্মীপুর, বাংলাদেশ। পড়াশুনা- এম.এ। নব্বই দশকের কবিতা কর্মী, প্রাবন্ধিক। মহাসচিব- অনুপ্রাস জাতীয় কবি সংগঠন। বিভাগীয় সম্পাদক: অনুপ্রাস সাহিত্য পাতা - দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রা ও সাপ্তাহিক কালধারা। সহযোগী সম্পাদক: শিরদাঁড়া। বিভাগীয় সম্পাদক (কবিতা)-শব্দকথন। বাংলাদেশ প্রতিনিধি: মননস্রোত (ত্রিপুরা, ভারত)।
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ- ১৬টি, গবেষণা প্রবন্ধ-২টি (বিজ্ঞান কবিতার ভাবনা ও কাব্য কথায় ইলিশ), সম্পাদনা কাব্যগ্রন্থ-১টি, সহযোগী সম্পাদনা (বিষয়ভিত্তিক)- ১২টি। জাগ্রত ছোট কাগজের সম্পাদক। প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ হয় নব্বই দশকে।