শাদা নাকফুল
সব কাঁপিয়ে যেন মেঘ এসে নামে!
কোথায় রাত্রি নামে সমস্ত দিন
লুকিয়ে রেখেছে মুখ-
শাদা নাকফুল!
দু একবার তোমাকে পাবার পর যেমন দুহাত ভরা শিউলি হলুদ,
কেমন সে রঙ!
শীত খুব শীত ভোরে কে আমাকে ডাকে?
ওঠো জাগো কোলের ভেতর থেকে একা ঘুমবাড়ি, কি করে তোমার কাছে আমি
আমার মন এমন ঘুমোলো, উঠোনে নিকোচ্ছে কেউ কোনো কুয়াশা! ঝমঝম শব্দ কাঁপছি আমি
আমার বুক ;
কি করে তোমার কাছে আমি, আমার মন-
ঘুমোলো ভেবেই উঠে বসে থাকি। গণিত আর গণিতের বই ছাড়া কোথাও নেই একটা সবুজ ডানা।
রূপকথা –
যাকে আপন করে আমি কোলে নিতে পারি। সঁপে দিতে পারি মুহূর্ত।
বাহিরে কোলাহল।
আমি জেগে থাকি ভয়ে, কি করে আমার ঘুম তোমার ঘুমের কাছে এসে বসে থাকে!
চিঠির গল্প
তারপর আমি তাকে লিখতে বসলাম। ভাবলাম তাকে বলি আমি শেষবারের মত লিখছি। কিন্তু না। আমার ভাগের অংশটুকু কেড়ে নেয়না সে। কেউ নেয়না। আমি পাবো।
একেকবার আমার তাকে মধুবন মনে হয়। মনে হয় খুব যখন সন্ধ্যা! গায়ের পশম দেখার মত আলো আর থাকেনা।
রোগে ধুঁকতে ধুঁকতে রোগা একটা হাত সামনে বাড়িয়ে আশ্রয় খোঁজে। আপন কিছু শুনতে চায়। তখন কেউ বলুক দেখা হবে। তখন যেন এর থেকে প্রিয় আর কিছু নেই।
ধরা যাক আমি প্রথম পক্ষ নই,দ্বিতীয় পক্ষ নই। অথবা তৃতীয় পক্ষ অথবা তারপর কিংবা তারপরের পক্ষ না হয়! হতেই পারি ডানায় শীত মাখা অন্ধকার।
ধরা যাক একটা দুটো বেড়াল রোজ মানুষের মত কাঁদে। কুসি কুসি হাত পা নিয়ে ওম চায় বুক খোঁজে।
ধরা যাক কেউ বলল তোমার সাথে অনেক কথা আছে আমার! শৈশবে কেউ বলেনা কেমন আছো তুমি?
-কতদিন তোমাকে দেখিনা।
একারণেই আমাদের যৌবনের অপেক্ষা!
আমি তাকে লিখতে বসেছি। হাত পা ছড়িয়ে ঘরের পথ করে দিতে সরে গেছি। সে গেছে বরফ ভেঙে ভেঙে কুঠার কিনতে। বনে যাবে। কাঠ কাটবে। আগুন জ্বালাবে। বড় তাপ প্রয়োজন তার। আমি বড় তাপে সেদ্ধ হতে হতে তাকে লিখি।
ভাবি বলব এবারই শেষ চিঠি লিখছি তোমাকে। অথচ সে জানে পুনশ্চ এক চিঠি পাবে।
প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলেও চিঠি থেকে সুগন্ধ বেরুবে। সাধারণ খামগুলোর ডাকটিকিট বড় সাধারণ হয় ওঠাতে গেলে ছিঁড়ে খুঁড়ে যায়। আমি বেছে বেছে মানুষ আনি। তারপর তার নাক চোখ মুখকে ডাকটিকিট করে পাঠিয়ে দিই চিঠিটা। অনেক দূরে-
যে নেই এখন।
নদীয়া আঁতকে ওঠে। এ কেমন চিঠি!
আরেকটু বেশি আমার নয় বলে এ আক্ষেপ তাকে বিরক্ত করে। সে কঠিন গলায় বলে দেয়, উত্তরের ব্যালকুনিতে সবুজ গাছ লাগিয়ে রেখেছি। দয়া করে সময় মত পানি দিও।
জলের উপর বেশিক্ষণ কি ওড়া যায়! তার কাঠিন্যকে ভালবেসে কারণ দিতে থাকি। এই যে অনন্তকাল পেরুবে তাকে ছাড়া সে সময়টা যেন কষ্ট কম হয় আমার।
এসব ঝড় খুব টের পাওয়া যায়। সে সব বোঝে। তার ঠোঁটের কোণে হাসি। সে বলে ঐখানে তুমি থাকো। ঐ সাদা বাড়িটার দোতলায় রাত হলেও বাতি জ্বলে।
যদি তাকে খুঁজি এক আবল তাবল চিঠির প্রাপক ভেবে, সে হারাতে থাকে। হাত নেড়ে বলতে থাকে পাহাড় পেরিয়ে এসো। দেখা হবে।
পাহাড় পড়ে থাকে পথে। কি করে পথ পার হই আমি?
প্রাপকেরা চিঠি পায়! আর সময়গুলো হয়ে যায় ডাকঘর। চিঠি পড়ে থাকে। পিওনের খামখেয়ালি! অসহ্য! একটা নতুন চিঠি আমি পুরোনো বছরকে দিয়েছি। আর বছর শেষে গুনতে যাই, ফিরতি চিঠিতে ডাকবাক্স আমার উপচে গেছে!
স্বপ্ন
তোমাকে ডাকলেই একটা পাতা খুলে যায়।
বললে, চললে, করলে-
একটা একটা করে!
তুমি কবিতা দেখালে
অথবা স্বপ্ন;
একটা একটা করে পাতা।
খুলে যায় খোঁপার মতন!
—-
ভুল
একটি নিঃশ্বাস অন্ধকারের বুকে মিশে যায়। একটি অন্ধকারে কার আলোকবর্তিকা ফুল তোমার মুখে এসে পড়ে। তুমি গেয়ে ওঠো… তুমি ওঠো গেয়ে,
বহুদিন আগে যা আমাকে দিয়েছো।
আমি যেন সেই গান কখনো শুনিনি।
দু একটা ভুলকে যদি বলি হও, হয়ে যায়।
আমি শুধু পাই থেকে থেকে তোমার দীর্ঘশ্বাসের ধ্বনি!
—
দৃষ্টি পথের সীমায়
এইসব ডাক রোদে পাতে গা
আদরে কুয়াশায়
এইসব ডাক ফুল হয়ে আসে
গন্ধ ছড়ায় যেন
মেঘ ভাসা চোখ-
আমাকে পেছনে আনে
আমাকে উজানে টানে
এইসব পাগলামী!
এমন পথের কথা
আমিও শুনিনি..
কেবল হাঁটে..পথে পথে হাঁটে…
যেখানে তোমাকে শেষবার
দেখেছিলাম আমি!
.
.
.