Home » গুচ্ছ কবিতা ।। বিরামচিহ্নের সংলাপ ।। বঙ্কিম কুমার বর্মন

গুচ্ছ কবিতা ।। বিরামচিহ্নের সংলাপ ।। বঙ্কিম কুমার বর্মন


ঈর্ষা জন্মালো অবশিষ্ট ক্ষুধায়। গড়িয়ে নামছে ততটা প্রখর নির্ভর। নিরুপায় হয়ে কিছু চৈত্রের পুনশ্চ ভাঁজ মেলে ধরেছি। তাতে উদ্ধার মিলেছে উদয়াস্ত সাঁকোর নির্মাণ। সহজবোধ্য যাত্রীর স্বপ্ন উপচে পড়েছে খুব। টুকটাক দূরগামী আদিম সখীরাও এই ঘাটে এসে ধূসর স্মৃতির আঙিনায় দোল দিয়েছে। কারা দু-একটা পাখি হারালো যৌবনের শুরুতেই।

ভাবি গভীর স্নানের চূড়োয় কেউ কি গুটি গুটি পায়ে ঢুকে পড়েনি বিশ্রামে। সেই প্রাজ্ঞ প্রাচীর হাত নেড়ে জানায় পিরিতির নিরিবিলি সংস্কার। কয়েকটা মুগ্ধ মুহূর্তের দ্রাবিড় সহবাস শিখছে যুদ্ধ-বাসনার ক্রিয়াকলাপ। অস্থির তোমার পাড়া তখনও ঢেউ ভাঙতে শিখেনি দু-একটা পিছুটান খুলে।


সিঁথির মতো ঘনিষ্ঠ হয়ে এলো কুঁড়িভরা সূর্যঘর। দিনরাত নির্জনতা হাতজোড় করে ভালো রাখার স্টেশন আওড়ায়। পাতলা বন্ধনে দিগন্ত ছেঁকে নেয় ঘুঘু নাচের ভিটা। আর একটা কুয়ো দিনের শেষে হাঁ করে তাঁকিয়ে দেখে জমা খরচের হেলদোল। তাঁর চাহনিতে একটা শুষ্ক নিরাপদ কাজ করে যার কোনো ছায়া পড়েনা জলে। ফুরিয়ে যাওয়ার ভয়ে ঘেমে জবজবে হয়ে যায় দৃষ্টি আঁচল।

টুকরো টুকরো পদধ্বনি ইনিয়েবিনিয়ে খুঁটে খায় তেজ। বিবিধ প্রসঙ্গ নিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে নাও দৃশ্যের কঙ্কাল। অসংখ্য গন্ধভরা অনুভূতি ফিরে যাচ্ছে একলা আকাশে। ফলাফলে আশ্চর্য নিয়মে নিভৃত পথচারী ঠেলেছে চিরবাস ভৌগলিক সভাগৃহ।


বৈপরীত্যে নাও এ তীব্র অধিকার। সিদ্ধান্তের জন্মলগ্নের শুরুতেই বিষণ্ণ কুয়াশার উপমহাদেশ। আমাকে শুধালে তাঁকে শ্রমের ভাষ‍্য তুলে দিয়েছি। প্রণয়ীর মত অভিজ্ঞান ক্ষমা প্রদর্শন রেখেছি বেঁচে থাকায়। কত কিছুইনা টোকা দেয় বিরতির দরজায়। কেবল কাহিনীর পর্যায়ে দলছুট হরিণ সাজতে হয় । দু’মুঠো ভিক্ষার আবেদন নিয়েই বর্ষা করতে হবে পার। একটা কোকিল তখনও মেখে দিচ্ছে মিশ্র ভালোবাসার অনুপাত।

অনন্ত আগুন কেঁপে কেঁপে ওঠে বালিকার সুখে। বলি শ্বেত পলাতক বাঁচিয়ে আর কতটা হাঁটবে একা। অপূর্ব লাজুক প্রতিবিম্ব দু-পা ফেলে নিশ্চিত শরীর বিছিয়ে। যেহেতু অ-নাগরিক প‍্যাঁচানো ভয় নিয়ে সবাক সেজেছে বিস্তর। আর কতখানি পাহাড় রেখেছে পিঠে।


হারানো ডাকের মধ‍্যযাম নতুবা জাগরণের সুনয়নী এসে পড়েছি। তাই আমাকেও ফিরতে হয়েছে নষ্ট প্রভায়। তবু বক্ষে সুধা শস‍্য পালন করতে হয় রোজ। উচ্ছ্বসিত জাহাজের গভীরতায় আমি হয়ে উঠেছি অতলস্পর্শী নতুন কথামালা। আজন্ম চেনা অচেনার বাড়ি আমাকে কোথায় টেনে নিয়ে গেছে, যেখানে নিয়মিত অশ্রুত নক্ষত্রের ছায়াময় সংসার।

ফলত কত নির্বাক বালুতটের সুপারিশ ম্রিয়মাণ। এসেছিল যারা ঘনায়ামান মেঘে তারা কি ফুটতে চেয়েছে একা কষ্টে। এখানে ষোলোআনা না-গোপন না-প্রকাশ‍্য যেন সাহসের নেহাত তীক্ষ্ণ পক্ষপাত।


আড়াআড়ি প্রস্তুত শোনাবে তুমি। যেন একটা সমাধান পেয়ে যেতে পারো ব‍্যবহারে। আর বেড়ে যেতে পারে তোমার দীর্ঘ আহ্বান। যথা উল্লেখিত পুকুর মাঝে মধ্যেই ছিপ ফেলতে পারে। ক্ষয়িষ্ণু বাসনায় নিষাদ ঘোষণা করে পরিযায়ী অমিলন পূর্বাঞ্চল। ঝড় বাদলের পাঁজর পেয়ে যায় সঞ্চয়ী আদর। এসো বনেদি দ্বিপ্রহর তোমাকে গুঁজে দিই গোপন ঠিকানায়। যেখানে বহুদিন রূপকথার গন্ধ লাগেনি। বিপন্ন হয়ে এসেছে ভিক্ষার ঝুলিটির আবেদন।

শরীরবৃত্তে প্রাচীন নদীটি ভাঙছে বিন্দুঘাম। জলচল পৌঢ় বচনের পরেও ব‍্যাখা এলোনা দু’হাতে। বিপুল গৃহবিদ‍্যার সশস্ত্র নিয়ে আলোচনায় হুবহু নকল করেছি দূরত্বলোক। তবু স্নেহের গিঁটে সমস্তটাই রেললাইন।

Ajit Dash

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ভাষা
Scroll to Top