Home » ঋভু চট্টোপাধ্যায়ের গুচ্ছকবিতা

ঋভু চট্টোপাধ্যায়ের গুচ্ছকবিতা

চারদেওয়াল ও মাঝখান

 একেকটা জানলা বন্ধ হয়, আর বদ্ধতা জাপটে
ধরে চার দেওয়াল । একটু পরেই খোলা দরজা থেকে
রোদ নামের এক মরীচিকা বুড়ি জটা ধুয়ে জল ছেটাবে,
তার নাগা শিষ্যের লিঙ্গ লোহার শিকে বাঁধা,
তবুও বাঘে ছোঁয়ার গল্প শুনিয়ে নৌকায় চাপাবে ।
এখন মিনিটে মিনিটে শরীর বদলে যায় ।
খাতায় ঈশ্বরের নাম লিখে দিন শুরুর আগেই শেষের ঘন্টা ।
সেদিনও একটা ভ্যান ড্রাম আর দড়ি খোঁজার জন্যে তিনটে
যুগ পেরিয়ে আসতে হল । শেষে ঘাম আর জলের
ফোঁটা মিলে গেলেও লক গেট চুয়ে বেরিয়ে আসা
হতাশা আর দরকষাকষির মাঝে নাভিশ্বাস ।
তবুও ভালো শুধু শ্বাস নেওয়ার জন্যেও
আকাশের নিচে গলা অবধি ঋণে ডুবে থেকেও
একটা ছোট্ট ঘুমের চেষ্টা করা যায় ।

পরিক্রমা       

মাঝে মাঝে স্বপ্নের ভিতর স্রোত জন্মায়,
জোর করে ধরে রাখি পাথর স্তম্ভ,
যার গায়ে দুধ ঢেলে আচমন শুরু ।
চোখ বন্ধ অথচ শরীর কাঁপে রাতের নাদের কাছে ।
খালি পা চারদিক গণ্ডি অথচ কাঁটা ঝোপ পা
ফেটে রক্তের অভিমুখ ।
এখনও বিশ্বাস এক গণ্ডুষ জলের মত,
এক ফোঁটা কোশের ভিতর ।
এটাতো পরিক্রমা মাত্র ।
উত্তর থেকে দক্ষিণ শুধু বয়ে যাওয়া,
স্রোত এক ঝলক ।
স্নান ও খাওয়া মানে প্রসাদ, ওষুধ শেঁকো বিষ,
পাথর শুষে নিচ্ছে আস্ত অহংকার ।
সে গলির মন্ত্র শক্তি বাঁধা পেরিয়ে যায়,
বন মোরগ গায়ে এখন চাপা উচ্ছ্বাস ।
মাথার উপর হাত বুলানো ছাতা,
না হয় অনঙ্গ পঞ্চভূত তবুও একে একে
সব দলে বাঁধা পড়ে বেরিয়ে যাওয়া,
ঘুরছি চারপাশের অগুন্তি
মাথার সাথে তাও তো একা বাঁ পা ছাড়া
ডানপায়ের আর কোন বন্ধু হয় না ।

এবং একাকিত্ব    

আস্তে আস্তে একাকিত্বের দ্রাবিড় উপত্যকায়
কমতে থাকা ভিড়ের শেষে এখনও যেভাবে
দাঁড়িয়ে হাত তুলে উপস্থিত দেখানো হচ্ছে
তাদের কার কার সাথে শূন্যতার সম্পর্ক হবে
সেই হিসাবেই দিন শেষ ।
শোনা গেল এবার থেকে শ্বাস নিতেও
কড়ি লাগবে।ঘুম থেকে উঠেই ছায়ার
পিঠে স্রোতের আশেপাশে
আর কিন্তু কেউই থাকবে না ।

অপেক্ষা    

তারপর ক্লান্তির কোশ ঘরে বসে বসেই
খুঁজে পাওয়া একটা কণা, ঘাম নয় জলের
বিন্দুর সাথে ফোটা কোন বায়ব রসায়ন ।
দূর থেকে শুধু মুখ বন্ধ চলা।
এই যে এক একটা শামুক অনবরত
একপা একপা তার মানেও ‘এবং ভবিষ্যত।’
সন্ধে মানেই কিন্তু গ্লাস গরম নয়,
বেঁচে থাকা ঘুম, একটু পাশ ফিরে
শোওয়া, এবং দুটো নির্ভেজাল রুটি।

শুধুই প্রশ্ন যখন  

সব পলিই কি পাললিক শিলা?
এই যে দরজা অথবা কড়া নাড়া,
এই যে দুপুর আর একটা নির্ভেজাল
স্রোত এখানে নিজেকে আয়না মনে
হলেও উল্কার সাথে খসে যায় চোখের জল।
কিভাবে যে ভবিষ্যত ও পরিকল্পনা
জেগে ওঠে ভূত ও ঘর বাড়ি
অথবা নিরন্তর গবেষণা, এদের কারোর কোন
সমীকরণ নেই।এখনও সেই উত্তর মানে
প্রশ্ন কর্তা, গলি মানে আস্ত ধানের খেত।

খাতা কলম  ও  সমীকরণ  

বিকাল নামে জানলায় ঝুলে থাকা
বিরোহী রোদ্দুরে, সে দিনের শেষ বারের
মত ঘরে ফেরে গোনা গুন্তি টাকা ও পয়সার দল।
সঙ্গে মিল ও অমিলের ভরে থাকা তথ্য।
সব হাত বদল সেই মাত্র ইচ্ছের বিরুদ্ধে গেলেও
রাত এখনও খাতায় কলমেই ভোর হয় ।

Ajit Dash

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ভাষা
Scroll to Top